ছ’মাস পরে পাহাড়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের ডাকে সাড়া দিয়ে পাহাড়ে উন্নয়নের কাজে গতি আনতে সফর করবেন একাধিক মন্ত্রী। সব ঠিক থাকলেন ১৯ ডিসেম্বর দার্জিলিঙে যাচ্ছেন রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আর কোন মন্ত্রী কবে যাবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে জিটিএ-র তরফে বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপারা এর মধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী, পুরমন্ত্রী, পঞ্চায়েতমন্ত্রী, পর্যটনমন্ত্রী-সহ অনেককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
গত ছ’মাসে পাহাড়ে যাননি কোনও মন্ত্রী। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব নেপালি কপি ভানুভক্তের জন্মদিন পালন করতে পানিঘাটায় গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে এক বার গাড়িধুরায় গিয়েছিলেন। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময়ে বিমল গুরুঙ্গপন্থীরা নতুন করে গোলমাল বাঁধাবে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বিনয়রা। তাই তাঁরা চাইছেন, তার আগেই একবার যাচাই করে দেখা যাক আবহাওয়া কেমন। সেই জন্যই তাঁরা চান, মন্ত্রীরা গিয়ে পাহাড়বাসীর সঙ্গে দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে মত বিনিময় করুন। তাতে এক দিকে যেমন কিছুটা হলেও তাদের মন বোঝা যাবে, অন্য দিকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জমে থাকা গুমোট কিছুটা হলেও কাটবে।
জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘শান্তি ও উন্নয়ন অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। পাহাড়ের অনেক সমস্যা আছে। সমাধানের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সব করছেন। ওঁর পরামর্শে অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গেও দেখা করেছিলাম। তাঁরা এলে ভালই হবে।’’
বস্তুত, বিনয়রা পাহা়ড়বাসীকে বোঝাতে চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রী সব রাজনীতির উপরে উঠে উন্নয়নের জন্যই আবার পাহাড়ে আসবেন। তাই তাঁর সফরের আগে অন্য মন্ত্রীরা পাহা়ড়ে গেলে, সেখানকার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করলে, চটজলদি কিছু সমাধানসূত্র দিলে আবহটা ইতিবাচক হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। সে জন্যই বিনয়রা এতটা সাবধান।
সাবধানী হয়ে পদক্ষেপ করছে পাহাড়ের তৃণমূলও। দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ, এ বারে মমতা পাহাড়ে গেলে আগ বাড়িয়ে পতাকা-ফেস্টুন নিয়ে পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকার দরকার নেই। এর আগে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সফরের অনেক আগে থেকেই দলের পতাকায় মুড়ে ফেলতেন পাহাড়ের শহর। এ বার সেই দৃশ্য চোখে পড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
সাবধানী রাজ্য পাহাড়বাসীর ক্ষোভের দিকেও নজর দিতে চাইছে। সরকার সূত্রে বলা হচ্ছে, সে জন্য জ্যোতিপ্রিয়কে প্রথমে পাঠানো হচ্ছে। বন্ধের পরে সব থেকে বেশি যে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ, তা হল রেশন ব্যবস্থা। জ্যোতিপ্রিয়র উপস্থিতিতে ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি শুরু হবে।
পাহাড়ের চা বাগান এলাকায় রেশন সামগ্রী রাখার কয়েকটি গুদামের জায়গাও চূড়ান্ত করবেন তিনি। যাবেন চা বাগানেও। সেখানে চা শ্রমিকদের সঙ্গেও সরাসরি কথা বলবেন খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘পাহাড়ে রেশন ব্যবস্থায় আরও গতি আনতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই যাচ্ছি।’’