প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি ও সোয়াইন ফ্লু-তে প্রাণহানি বাড়ছে। এই অবস্থায় গ্রামে গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত রোগী খুঁজতে দল নামাচ্ছে পঞ্চায়েত দফতর। আক্রান্তদের খোঁজ পেলে দিনের দিন সেই তথ্য স্বাস্থ্য ভবনে পাঠাবে পঞ্চায়েতের দল। সেই জন্য স্বাস্থ্য দফতর একটি বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি করে দিয়েছে।
জ্বরের প্রকোপ নিয়ে মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভবনে বৈঠকে বসেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। হাজির ছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারাও। ঠিকমতো সমীক্ষা করে তা স্বাস্থ্য ভবনে জানাতে খরচ হবে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা। আপাতত ৩০ কোটি দিয়ে সেই কাজ শুরু হচ্ছে।
সুব্রতবাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পঞ্চায়েত স্তরেও এ বার জ্বরাক্রান্তদের চিহ্নিত করা হবে। আশা করা হচ্ছে, খরচ দিয়ে দেবে অর্থ দফতর। ‘‘শুধু জ্বরের রোগী খুঁজলেই হবে না, তাঁদের স্থানীয় ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেবেন পঞ্চায়েতকর্মীরা। সেই জন্য প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি করে অ্যাম্বুল্যান্সের সংস্থান রাখতে বলা হয়েছে,’’ বলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। পঞ্চায়েতসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন জানান, প্রতিটি পঞ্চায়েতেই ১৫ জনের দল গড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন সুপারভাইজার, আট জন সমীক্ষক এবং ছ’জন নিয়ন্ত্রক বাহিনীর সদস্য। প্রত্যেকে প্রতিদিন ১৫০ টাকা ভাতা পাবেন।
ওই দলের কাজ কী?
দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এক-একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে ১০-১৫টি গ্রাম থাকে। সমীক্ষকদল প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরবে। কারও জ্বর হয়েছে শুনলেই তা লিপিবদ্ধ করে পঞ্চায়েত দফতরে ফিরে আসবে। এসে সে-দিনই স্বাস্থ্য দফতরের সফটওয়্যারে সেই তথ্য তুলে দেওয়া হবে। জ্বরের খবর পেলেই পরের দিন সমীক্ষকদলের তালিকা দেখে নিয়ন্ত্রকদল যাবে। নিয়ন্ত্রক দলের সদস্যেরা অকুস্থলে গিয়ে জমা জল সরানো, ধোঁয়া দেওয়া, গাপ্পি মাছ ছাড়ার মতো কাজ করবেন। প্রয়োজনে জ্বরে আক্রান্তদের ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেবেন।
এক পঞ্চায়েতকর্তার বলেন, ‘‘আমাদের কাজ কোন এলাকায় জ্বর হচ্ছে, তা চিহ্নিত করে দেওয়া এবং দিনের দিন স্বাস্থ্য ভবনকে তা জানানো। এর পরের কাজ স্বাস্থ্য দফতরের।’’ উপস্থিত এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘‘প্রতিদিন গ্রামভিত্তিক রিপোর্ট পেলে রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হবে।’’
বৈঠকে হাজির দুই ২৪ পরগনা ও হাওড়ার জেলাশাসকেরা জানান, এক-একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ১৫ জনের দল যথেষ্ট নয়। পুরসভায় এক জন সমীক্ষক দিনে ৬০টি বাড়ি ঘুরতে পারেন। কিন্তু ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা গ্রামে এক জন সমীক্ষক দিনে ২০টির বেশি ঘরে পৌঁছতে পারছেন না। ফলে ছ’মাস মশাবাহিত রোগ ও রোগীর উপরে নজরদারি চালাতে গেলে পঞ্চায়েত-পিছু অন্তত ৩০ জন সমীক্ষক-নিয়ন্ত্রকের প্রয়োজন। সে-ক্ষেত্রে খরচ ৩০০ কোটি ছাড়াতে পারে। পঞ্চায়েতকর্তারা জানাচ্ছেন, কাজ শুরু হয়েছে। ফল দেখে নবান্নকে বিস্তারিত ভাবে তা জানানো হবে।