তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) ডাকা সভা শুরুর আগে মাইকে ঘোষণা হচ্ছিল, ‘শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন’। মঞ্চের পাশে ছিল পার্থবাবুর ছবিও। মঙ্গলবার আরামবাগে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে হাজিরও ছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু যাতায়াতের পথে পড়লেও দলের ছাত্র সংগঠনের ওই সভায় ঢুকলেন না তৃণমূলের মহাসচিব। উল্টে রাস্তার প্রায় অর্ধেক জুড়ে সভা করা নিয়ে জেলা নেতাদের কাছে উষ্মা প্রকাশ করলেন। তবে শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খোলেননি।
টিএমসিপি সূত্রের খবর, তাদের নামে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি কলেজে ভর্তিতে টাকা নেওয়া, বহিরাগত ঢুকিয়ে বিশ্ৃঙ্খলা করার যে নিয়মিত ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছে, তারই প্রতিবাদে এ দিন ওই সভার আয়োজন করা হয়। ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা। কিন্তু পার্থবাবু যোগ দিলেন না কেন?
তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের একাংশ শিক্ষামন্ত্রীর এই অবস্থানের পিছনে শঙ্কুদেবের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক সম্পর্কের ‘প্রতিফলন’ দেখছেন। মাস তিনেক আগে শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন পাথর্র্বাবু। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পরপর বিশ্ৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি-র নামে। নদিয়ার চাপড়ায় ভক্তবালা বিএড কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টাকা নিয়ে পড়ুয়া ভর্তিতে নাম জড়িয়েছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি নেতা তন্ময় আচার্যের। জুনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারভাঙা ভবনের দোতলায় সিন্ডিকেট বৈঠক চলাকালীন দলবল নিয়ে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা চালাতে দেখে গিয়েছিল শঙ্কুদেবকে। তাতে তৃণমূলই বিব্রত বোধ করে।
এর পরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘেরাও-বিক্ষোভ করা চলবে না, বহিরাগতদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঢোকা চলবে নাএই মর্মে দলে কড়া বার্তা দেন পার্থবাবু। তার পর থেকেই ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর সম্পর্কে কিছুটা ‘শীতলতা’ এসেছে বলে দলেরই অনেকে মনে করেন।
তবে, শঙ্কুদেবের দাবি, “পার্থদাকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি। উনি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। কেন উনি এই সভায় আসবেন?” তা হলে, অনুষ্ঠানে আসবেন এই মর্মে পার্থবাবুর নামে প্রচার করা হল কেন? শঙ্কুদেবের দাবি, “সংগঠনের তরফে কোনও প্রচার করা হয়নি। আগে স্থানীয় কিছু নেতা প্রচার করে থাকতে পারেন। তাঁরা হয়তো ভেবেছিলেন, পার্থদা এক বার আসবেন।”