UGC

দরবার পার্থের, পরীক্ষা-দৌত্যে রাজি রাজ্যপাল

বাধ্যতামূলক পরীক্ষার কেন্দ্রীয় নির্দেশের বিরোধিতা কেন করা হচ্ছে, রাজ্যপালকে সেটা বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে বলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৫:২৬
Share:

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।—ফাইল চিত্র।

উচ্চশিক্ষা সচিব, মুখ্যমন্ত্রী ও উপাচার্য স্তরে চিঠিতে পুনর্বিবেচনার আর্জির পরেও পরীক্ষার ব্যাপারে অনমনীয় দিল্লি রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কেন্দ্র কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত বর্ষ ও চূড়ান্ত সিমেস্টারের পড়ুয়াদের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করায় প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজ্য। কিন্তু কাজ হয়নি। অতিমারির আবহে কেন পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব, সেটা ইউজিসি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে বুঝিয়ে বলার জন্য এ বার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে অনুরোধ করল রাজ্য।

Advertisement

সোমবার রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষাসচিবের এক বৈঠকের পরে ধনখড় টুইট করে জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি ইউজিসি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলবেন। ছাত্রদের স্বার্থ সম্পূর্ণ ভাবে সুরক্ষিত হবে। পরে রাজভবন থেকেও একটি বিবৃতি দেওয়া হয়।

শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনকে নিয়ে এ দিন রাজভবনে যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বাধ্যতামূলক পরীক্ষার কেন্দ্রীয় নির্দেশের বিরোধিতা কেন করা হচ্ছে, রাজ্যপালকে সেটা বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে বলা হয়।

Advertisement

বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এই সঙ্কটকালে পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে মুখ্যমন্ত্রী, উচ্চশিক্ষা দফতর এবং রাজ্য সরকার যে-আহ্বান জানিয়েছেন, তার সঙ্গে থাকার জন্য রাজ্যপালকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ওঁকে বলেছি, ইউজিসির প্রথম দফার অ্যাডভাইজ়রি মেনেই পরীক্ষা নিয়ে রাজ্যের অ্যাডভাইজ়রি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পাঠিয়েছি। তার পরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত (পরীক্ষা না-নেওয়ার) নিয়েছে। তাই আপনিও মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ও ইউজিসি-কে রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত বিচার ও অনুমোদন করতে বলুন।’’ শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যপাল আশ্বস্ত করেছেন। করোনা-কালে পড়ুয়াদের সঙ্কটে ফেলতে চান না তাঁরা।

৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষার নির্দেশ নিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও যে উদ্বিগ্ন, আচার্য-রাজ্যপাল বার বার তা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছেও প্রকাশ করেন তিনি। তার মধ্যেই রাজভবনে দরবার করল রাজ্য।

কেন্দ্রীয় নির্দেশের বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা সচিবকে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সচিব এবং ইউজিসি-কে উপাচার্যেরা চিঠি দিয়েছেন। ‌তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-ও চিঠি লিখেছে ইউজিসি এবং কেন্দ্রকে।

এই সামগ্রিক উদ্যোগের মধ্যে একটা কাঁটাও আছে। ১৫ জুলাই, বুধবার উপাচার্যদের তাঁর ভার্চুয়াল বৈঠকে থাকতে বলে চিঠি লিখেছেন রাজ্যপাল। কিন্তু রাজ্যের নতুন বিধি অনুযায়ী এই চিঠি উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে আসার কথা। উপাচার্যেরা বিধির বিষয়টি রাজ্যপালকে জানান। কিন্তু এ দিন রাজভবন থেকে ভার্চুয়াল বৈঠকের লিঙ্ক পাঠিয়ে বলা হয়েছে, আচার্যের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত না-থাকলে বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। উপাচার্য পরিষদের সম্পাদক সুবীরেশ ভট্টাচার্য এই বিষয়ে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘যে-ভাষায় চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাতে আমরা অপমানিত, দুঃখিত এবং হতাশ।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন