বন্‌ধে মিশ্র সাড়া, বিপাকে যাত্রীরা

সবং-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার কংগ্রেসের ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্‌ধে সারা রাজ্যে মিশ্র সাড়া পড়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি দেখা গিয়েছে। যদিও শহর কলকাতায় এই বন্‌ধের প্রভাব খুব একটা চোখে পড়েনি। অন্য দিনের তুলনায় শহরের রাস্তায় ২৫% বাস কম নামলেও যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৫ ১০:০৬
Share:

একা অধীর রক্ষা করেন? বহরমপুরে গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।

সবং-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার কংগ্রেসের ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্‌ধে সারা রাজ্যে মিশ্র সাড়া পড়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি দেখা গিয়েছে। যদিও শহর কলকাতায় এই বন্‌ধের প্রভাব খুব একটা চোখে পড়েনি। অন্য দিনের তুলনায় শহরের রাস্তায় ২৫% বাস কম নামলেও যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। গণ্ডগোলের আশঙ্কায় রাস্তাঘাট অনেকটাই সুনসান রয়েছে। আশঙ্কা থেকেই অনেক স্কুলে ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। শিয়ালদহ, হাওড়া স্টেশনে ট্যাক্সি এ দিন অন্য দিনের তুলনায় কম চোখে পড়ছে। হাওড়া ময়দানে একটি সিটিসি-র একটি বাসে ভাঙচুর করেন কংগ্রেস সমর্থকরা। ধর্মতলায় কংগ্রেস সমর্থকরা অবরোধ করলেও পরে পুলিশ এসে তাদের হটিয়ে দেয়। শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে সকালের দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়লে কংগ্রেস সমর্থকেরা সেখানে অবরোধে নামেন। ফলে যান চলাচল কিছুটা বিপর্যস্ত হয়। ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। এ দিন শহরের রাস্তায় বাসের সংখ্যা অন্য দিনের তুলনায় কম থাকায় কারণে মেট্রোয় উপচে পড়ে ভিড়। তবে, মেট্রো চলাচল স্বাভাবিকই রয়েছে। এরকম দু’-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা বাদ দিলে কলকাতা শহরে বন্‌ধের খুব একটা প্রভাব পড়েনি।

Advertisement

বন্‌ধের বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘বন্‌ধের নামে প্রহসন হচ্ছে। কোনও বন্‌ধ আমরা সমর্থন করি না। একটাও বন্‌ধ মানা যায় না।’’ নজরুল মঞ্চে দলের কর্মীদের নিয়ে সভায় তাঁর পরামর্শ, ‘‘সবাইকে বলব, মাথা গরম করে নয়, শান্তিপূর্ণভাবে মানুষকে বোঝান। ধ্বংসাত্মক রাজনীতি নয়, গঠনমূলক ও মূল্যবোধের রাজনীতি হওয়া উচিত।’’

দেখুন গ্যালারি:

Advertisement

কলকাতা ও শহরতলির বন্‌ধ-চিত্র

তবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বন্‌ধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে। সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, ভগবানগোলা ইত্যাদি জায়গায়। বহরমপুরে কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি নিজে রাস্তায় নেমে সমর্থকদের সঙ্গে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। পুলিশ বন্‌ধ-সমর্থকদের হটাতে গেলে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠি চার্জ করতে হয়। জখম হন কয়েকজন কংগ্রেস-সমর্থক। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীরও। তিনি জামা খুলে প্রতিবাদ করেন। তাঁর কথায়, “আমরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে আসিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বন্‌ধ বানচাল করার চেষ্টা করছেন। বন্‌ধ-সমর্থকদের গ্রেফতার করে থানাগুলি ভর্তি করে দেওয়া হয়েছে।”

রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় রেল অবরোধে বিপাকে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। দমদম-বারাসত শাখায় ট্রেন অবরোধ হয়েছে। অবরোধ শুরু হয়েছে বিরাটি স্টেশনে। মুর্শিদাবাদ, আলিপুরদুয়ার, রায়গঞ্জ, ক্যানিং, ঘুটিয়ারি শরিফ, শ্যামনগর, কাঁচরাপাড়ায় রেল লাইন অবরোধ করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে শিয়ালদহ-লালগোলা রেল পরিষেবা। অন্য দিকে, হাওড়া-আজিমগঞ্জ লাইনেও ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল স্বাভাবিক থাকলেও জীবনযাত্রা চলছে বেশ ধীর গতিতে।

দেখুন গ্যালারি:

জেলার বন্‌ধ-চিত্র

সারা রাজ্য জুড়ে বন্‌ধের এরকম চেহারা দেখা গেলেও সবং ছিল বেশ উত্তপ্ত। এ দিন সবংয়ে বিডিও অফিস ভাঙচুর করেছে বন্‌ধ-সমর্থকরা। সবংয়ের বিডিও বিকাশ মজুমদার জানান, বন্‌ধের দিনে অফিস খুলে রাখার প্রতিবাদে একটি সশস্ত্র দল ঢুকে পড়ে বিডিও অফিসে। অফিস ভাঙচুর করার পাশাপাশি তারা কর্মীদের মারধরও করে।

অন্য দিকে, বর্ধমান স্টেশনেও অবরোধ তুলতে গেলে বন্‌ধ-সমর্থকদের সঙ্গে লড়তে হয় পুলিশকে। এই ঘটনায় বর্ধমান থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন