Pathashree

পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের অগ্রগতি, সাফল্য তুলে ধরতে সমাজমাধ্যমে প্রচার চালাবে সরকার

এই প্রকল্পে ২২টি জেলায় মোট ৮,৭৬৭টি রাস্তার কাজ করা হবে। যার মধ্যে ৭,২১৯টি নতুন রাস্তা তৈরি এবং ১,৫৪৮টি রাস্তা মেরামত করা হবে। এই প্রকল্পের বিস্তারিত মানুষকে জানানোই সরকারের উদ্দেশ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৩ ১৫:৪৫
Share:

চলতি বছর বাজেট বক্তৃতার সময় রাস্তাশ্রী-পথশ্রী প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে শুরু হয়ে গেল পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্প। পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামীণ এলাকায় নতুন রাস্তা নির্মাণ এবং মেরামতের জন্য এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এ বার সেই প্রকল্পের প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার হবে সমাজমাধ্যমের মঞ্চগুলিও। এই প্রকল্পে ২২টি জেলায় মোট ৮,৭৬৭টি রাস্তা নির্মাণ এবং মেরামতের কাজ হবে। যার মধ্যে ৭,২১৯টি নতুন রাস্তা তৈরি এবং ১,৫৪৮টি রাস্তা সারাই করা হবে। এই প্রকল্পের যাবতীয় খুঁটিনাটি রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষকে জানাতে চাইছে রাজ্য সরকার। তাই এই প্রকল্পের প্রচারে সাত দফা নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামেও প্রচার করতে হবে। রাস্তার ছবি তুলে সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলিতে পোস্ট করতে হবে। সেই রাস্তা কত কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের তাও উল্লেখ করতে হবে। রাস্তার নির্মাণে কত টাকা খরচ হয়েছে, সেটিও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। এই রাস্তা কোন এলাকা থেকে কোন এলাকার সঙ্গে যুক্ত, তা সমাজমাধ্যমে জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, সেই রাস্তার কারণে কত মানুষ উপকৃত হয়েছেন, তাও তুলে ধরতে হবে সমাজমাধ্যমে।

Advertisement

যেহেতু পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পে গ্রামীণ রাস্তাগুলি রাজ‌্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকেই করছে, তাই সেই বিষয়টিও জনসমক্ষে তুলে ধরা হোক, এমনটাই চাইছে নবান্ন। এই প্রকল্পে তিন হাজার কোটি টাকা খরচে ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরি করবে রাজ্য। বিভিন্ন গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব তহবিল গড়ে নতুন রাস্তা তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছেন। তাই এই প্রকল্পের বিষয়টি প্রচার করার ক্ষেত্রে সব রকম পথ অবলম্বন করতে চায় নবান্ন। প্রচারের মূল দায়িত্বে থাকবে জেলা প্রশাসন। সমাজমাধ্যমে কী পোস্ট করা হবে তা যেমন ঠিক করবে জেলা প্রশাসন, তেমনই অন্য পথেও প্রচার করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারাই। জেলাশাসক, বিডিও এবং পঞ্চায়েত অফিসে বসানো হবে ডিসপ্লে বোর্ড। তাতে থাকবে রাস্তা নির্মাণের যাবতীয় তথ্য। ওই এলাকায় বিলি করতে হবে লিফলেটও। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের নির্দেশে, রাস্তা নির্মাণের জায়গায় তথ্য-সহ বোর্ড দিতে হবে। প্রতিটি ব্লকে, পঞ্চায়েত ভবন এবং মহকুমায় বড় ছোট ব্যানার এবং ফ্লেক্স লাগাতে হবে। প্রচারে রঙিন ট্যাবলোর ব্যবহার করতে হবে। বৈদ্যুতিন মাধ্যমেও বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাস্তা নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে মাইকিং করে প্রচার চালাতে হবে।

রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ভেবেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানুয়ারি মাসের ২ তারিখ থেকে তৃণমূল রাজ্যের জুড়ে ‘দিদির দুত’ প্রকল্পের সূচনা করেছিল। সেই কর্মসূচী রূপায়নে গিয়ে তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতারা গ্রামীণ রাস্তার বেহাল দশার কারণে আমজনতার বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। সেই কর্মসূচির কারণেই বেহাল রাস্তার বিষয়টি রাজ্য সরকারের নজরে আসে। তারপরেই চলতি বছর বাজেট বক্তৃতার সময় রাস্তাশ্রী-পথশ্রী প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার সেই প্রকল্পের উদ্বোধন হয়ে গেল সিঙ্গুরে। তাও আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের সুফল এ বারের পঞ্চায়েত ভোটের নিজেদের ঘরে তুলতে মরিয়া শাসক দল তৃণমূল । তাই সব রকম প্রচারের পাশাপাশি, সমাজমাধ্যমের প্রচারেও জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন