তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে অতীতের আতঙ্ক

সীমান্ত সড়ক ধরে সোজা পূর্ব দিক বরাবর উজালের বসতি এলাকা পৌঁছতে হয় ওই আউটপোস্টের পাশ দিয়েই। তার আগে ও পরে বিএসএফের সতর্ক পাহারা।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

হিলি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৩৯
Share:

সতর্ক: উজলে চলছে কড়া নজরদারি। নিজস্ব চিত্র

উজালের বদলে গোপালপুর। বর্ডার আউটপোস্টের (বিওপি) নাম বদলেছে। কিন্তু আবহে বদল হয়নি দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের কাঁটাতারহীন ওই এলাকায়।

Advertisement

সীমান্ত সড়ক ধরে সোজা পূর্ব দিক বরাবর উজালের বসতি এলাকা পৌঁছতে হয় ওই আউটপোস্টের পাশ দিয়েই। তার আগে ও পরে বিএসএফের সতর্ক পাহারা। কাশ্মীরে জঙ্গি হানার পরে আপাত শান্ত ওই সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বেড়েছে।

জমিতে বোরো ধান বুনছিলেন এক চাষি। কথা বলতে বলতে তিনি জানালেন, পরিচয়পত্র দেখিয়ে চলে যাতায়াত। দিনের বেলায় এক রকম। রাতে ছবি বদলে যায়। অন্ধকারে কি অবাধ অনুপ্রবেশ চলে? মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলছেন বাসিন্দারা। সেই ফাঁকে কি বিপজ্জনক কেউ ঢুকে পড়তে পারে? কোনও জঙ্গি বা অপরাধী? আশঙ্কা উড়িয়ে দিলেন না বাসিন্দাদের একাংশ। গোয়েন্দাদের আবার দাবি, আগাগোড়া কাঁটাতারে ঘেরা কুমারগঞ্জ সীমান্তকেও বাংলাদেশের সঙ্গে যাতায়াতের করিডর হিসেবে অপরাধীরা ব্যবহার করছে।

Advertisement

এ বার চলুন হিলির হাড়িপুকুরে। কাঁটাতারহীন এলাকা, উল্টো দিকে বাংলাদেশের বাগমারা গ্রাম। কেমন এখানকার জীবন? বাগমারার মসজিদে নমাজ পড়েন হাড়িপুকুরবাসী। বেশ কয়েক বছর আগে হাড়িপুকুর এলাকা থেকে জিলোটিন স্টিক উদ্ধার করেছিল বিএসএফ। হিলি সীমান্তে চেকপোস্ট থাকা সত্ত্বেও এবং সেখান দিয়ে সরকারি ভাবে যাতায়াত হওয়া সত্ত্বেও কাছাকাছি কাঁটাতারহীন এলাকা দিয়ে এ ভাবেই অনুপ্রবেশ ও পাচারের আশঙ্কা থম মেরে থাকছে। এই এলাকায় জঙ্গি বা অপরাধমূলক কার্যকলাপের সাক্ষীও রয়েছে হিলি।

গত ২০১৭ সালের ১৯ জুন জঙ্গি-যোগের অভিযোগে মুম্বইয়ে ধরা পড়ে হিলির কৃষ্ণপুরের যুবক হাবিবুর ওরফে হাবিব মণ্ডল। ২০১২ সাল থেকে হাবিব মুম্বইয়ে কল সেন্টার চালাতেন। হিলির ৬ জনের নামে সিম কার্ড তোলে সে। তার পরে সেগুলির মাধ্যমে মুম্বই ও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মরক্কো, অস্ট্রিয়া, মরিশাস, সিরিয়া, দুবাইয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন করার অভিযোগ পুলিশ তাকে ধরে। ওই মামলাটির তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়া হয়। আড়াই বছর আগে কুমারগঞ্জ থানার বোলতা গ্রামের বাসিন্দা ২৮ বছরের আলিমুল ইসলামকে জেহাদি সন্দেহে হায়দারাবাদ থেকে এসটিএফ গ্রেফতার করে। অভিযোগ, কুমারগঞ্জের ওই সীমান্ত গ্রামে মাদ্রাসা খুলে জেহাদি প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছিল সে। এসটিএফের দাবি, ওই ষড়যন্ত্রে সামিল ছিল এক পাকিস্তানিও।

এর বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে কুমারগঞ্জ সীমান্তে ঢুকে ধরা পড়ে কাশ্মীরি জঙ্গি রমজান আলি লোন। কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে জঙ্গি হানায় অভিযুক্তরা প্রথমে বিহারে, তার পর উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর হয়ে হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালানোর ঘটনাও ঘটেছে। বিএসএফের দাবি, ইদানীং জঙ্গি যাতায়াতের খবর নেই। তবু আশঙ্কা যাচ্ছে না বাসিন্দাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন