যাত্রা: এনজেপি স্টেশন থেকে ছাড়ছে দার্জিলিং মেল। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কা ছিল অস্বাভাবিক দেরিতে পৌঁছবে ট্রেন। তবে দেখা গেল দুটি ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের কমবেশি দেড় ঘণ্টা দেরি করে স্টেশনে পৌঁছেছে। এটাই আপাতত স্বস্তি দিচ্ছে রেলকে, যাত্রীদেরও। যদিও রেল কর্তাদের একাংশের দাবি, অগ্নিপরীক্ষা শুরু বৃহস্পতিবার রাত থেকে।
এ দিন থেকেই শিয়ালদহ এবং এনজেপি দুই স্টেশন থেকেই দার্জিলিং মেল, পদাতিক, কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস একসঙ্গে ছাড়তে শুরু করেছে। কামাক্ষ্যা-মুম্বই এসি এক্সপ্রেসও চলছে। নিউ তিনসুকিয়া-বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেসের মতো দুরপাল্লার আরও কয়েকটি ট্রেন চলবে আজ শুক্রবার থেকে। তার আগে বৃহস্পতিবার শুরুর দিনটা ভালভাবেই উতরে গিয়েছে বলে দাবি রেল কর্তাদের।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে কলকাতাগামী আরও কয়েকটি ট্রেন চলাচল শুরু করবে এনজেপি থেকে। আজ, শুক্রবার সেই ঘোষণা হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত তেলটা সেতু-সহ লাগোয়া প্রায় একশো কিলোমিটার পথে ঘণ্টায় দশ কিলোমিটারের বেশি গতি তোলায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে কারণেই ট্রেন চলাচলে ‘লেট’ হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন রেল কর্তারা। এ দিন দার্জিলিং মেলে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছেছেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দা জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরাও ভেবেছিলাম নিউ জলপাইগুড়িতে ট্রেন ঢুকতে বেলা গড়িয়ে যাবে। তবে রাতভর ট্রেন ভালই এসেছে। তাতে মনে হচ্ছে সেতুতে আপাতত কোনও সমস্যা নেই।’’ পদাতিক এক্সপ্রেসে ছিলেন শিলিগুড়ির অম্লান বক্সি। তাঁর অভিজ্ঞতা, ‘‘কিছু সময়ে ট্রেন অত্যন্ত ধীর গতিতে চলেছে। কিন্তু তার পরেই গতি অনেকটাই বাড়িয়েছে। তাতেই মনে হয়, অস্বাভাবিক দেরি এড়ানো গিয়েছে।’’
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে জানানো হয়েছে, তেলটা সেতুর আপ-ডাউন দু’টি লাইনেই ট্রেন চলছে। বেশ কয়েকদিন ট্রেন চললেও সংস্কার করা অংশে নতুন কোনও সমস্যা হয়নি। আপাতত ঘণ্টায় দশ কিলোমিটারের বেশি জোরে ট্রেন চলতে পারবে। তা নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। রেলের এক কর্তার কথায়, ‘‘কয়েকটি ট্রেনকে পরীক্ষামূলক ভাবে তুলনামুলক বেশি গতিতে চালানো হয়েছে। কোনও সমস্যা নেই।’’
এ দিন থেকেই এনজেপি থেকে দার্জিলিংমেল-সহ বেশ কয়েকটি ট্রেন ছেড়েছে। দুপুর একটা থেকে দার্জিলিং মেলের জেনারেল কামরায় ওঠার লাইন পড়েছে। ট্রেন প্ল্যাটর্ফমে এসে দাঁড়াতেই যাত্রী না মালবাহী কুলি কে আগে উঠবে তা নিয়ে ঠেলাঠেলিও শুরু হয়েছে আগের মতোই। স্টেশনে ঢোকার মুখে একপ্রস্ত যানজটও হল সন্ধের পর।
এ দিন এনজেপিতে ট্রেনের শেষ কামরা প্ল্যাটফর্মের মাঝামাঝি পেরিয়ে যাওয়ার পরে হঠাৎ থেমে গেল দার্জিলিং মেল। জানা গেল, কেউ চেন টানেননি। গার্ডের নির্দেশেই থামল ট্রেন। স্বামী-স্ত্রী-মেয়ে তিনজনে দৌড়ে ট্রেনে উঠলেন। গার্ড নাসিম আলি জানালেন, তিনজনকে দৌড়তে দেখে চালককে ওয়াকিটকিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। বললেন, ‘‘এতদিন অনেক যাত্রীর অনেক সমস্যা হয়েছে। ট্রেনের জন্য সকলে অনেক অপেক্ষা করেছেন। এতটুকু তো আমরাও করতেই পারি।’’ বৃহস্পতিবার রাতে এমন সব ঘটনা দেখে যাত্রীরা বলছেন, যাক এনজেপি ফিরছে এনজেপিতেই!