আঁধারে আলো/২

অবরোধ তুলে দিল দেগঙ্গা

মঙ্গলবার বিকেলে অশান্তিবাজদের খেদিয়ে এলাকাছাড়া করলেন দেগঙ্গা-বেড়াচাঁপার এই বাসিন্দারা। অবরোধ তুলে দিয়ে বললেন, দেগঙ্গায় যখন বিপুল ঘোষ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাঁর বাড়ির বাজার আসে ইয়াকিনের থলেতে।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

দেগঙ্গা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০৪:১০
Share:

দত্তপুকুরে চলছে ট্রেন অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।

এমন প্রতিরোধের মুখে পড়তে হতে পারে, ভাবেনি অবরোধকারীরা।

Advertisement

দু’পক্ষের সংঘর্ষ, অবিশ্বাস যে কতটা ভয়াবহ, অতীতে বহু বার দেখেছে দেগঙ্গা। এ বারে আর তাই সেটা হতে দিলেন না ওঁরা।
ওঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন ফরিদ-ইয়াকিন-আসলাম, আছেন গোপাল-বাবু-সলিলরাও।

মঙ্গলবার বিকেলে অশান্তিবাজদের খেদিয়ে এলাকাছাড়া করলেন দেগঙ্গা-বেড়াচাঁপার এই বাসিন্দারা। অবরোধ তুলে দিয়ে বললেন, দেগঙ্গায় যখন বিপুল ঘোষ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাঁর বাড়ির বাজার আসে ইয়াকিনের থলেতে। গোপাল-ফরিদরা বলেন, “আমরা দেখেছি, এই হানাহানিতে কারও লাভ হয় না। রামের পুড়ে যাওয়া বাড়ির চাল রহিমকেই ছাইতে হয়। আর রহিমের খেতের আনাজ হাটে পৌঁছতে ভরসা রামেরই ভ্যান।”

Advertisement

এ দিন দুপুরের পর থেকেই দেগঙ্গা-বেড়াচাঁপা এলাকায় গাড়িতে দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করে প্রচুর বহিরাগত। সিঁদুরে মেঘ দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্থানীয় সাংসদ ইদ্রিশ আলির গাড়ি ভাঙচুর হয়। তাঁর গাড়িতে ছিলেন এক আশ্রমের মহারাজও। এর পরেই বাদুড়িয়ার দিক থেকে গাড়ি নিয়ে প্রায় পাঁচশো লোক এসে জড়ো হয় বেড়াচাঁপা মোড়ে। শুরু হয় অবরোধ। বাকিরা গাড়িতে চেপে এলাকা দাপিয়ে বেড়াতে থাকে।

আরও পড়ুন: সবাই বাঙালি, বলছেন আনিস

এর মধ্যেই দু’পক্ষের লোকেরা এক জোট হয়ে দেগঙ্গা থানায় যান। পুলিশ এলাকায় আসতে দেরি করতে থাকায় ফের আলোচনায় বসেন উভয় পক্ষের মানুষ। উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক নেতারাও। আলোচনায় ঠিক হয়, কোনও ভাবেই গোলমাল পাকাতে দেওয়া চলবে না।

দু’পক্ষের কয়েকশো মানুষ বেড়াচাঁপা মোড়ে গিয়ে অবরোধকারীদের চলে যেতে বলেন। বেড়াচাঁপার বাসিন্দা গোপাল বিশ্বাস, শ্যামল চৌধুরী, দেগঙ্গার বাসিন্দা রহিম মল্লিক, শেখ ইয়াসিনরা বলেন, “ওদের কাছে জানতে চাই, আমাদের এলাকায় কী ঘটেছে? কেন ওরা এখানে এসে অবরোধ করছে? কোনও জবাব না দিয়ে ওরা স্লোগান আর হুমকি দিতে শুরু করে।” শ্যামল-ইয়াসিনরা জানান, তাঁদের মধ্যে সব পক্ষের মানুষই রয়েছেন। ফলে, লড়াই হলে সব পক্ষেরই রক্ত ঝরবে। তাতেও কাজ না-হওয়ায় অবরোধকারীদের তাড়া করেন
সবাই মিলে। তাড়া খেয়ে
শেষমেশ পিঠটান দেয় তারা।

বাসিন্দাদের এই সক্রিয় ভূমিকাতেই বুধবার স্বাভাবিক ছিল দেগঙ্গা-বেড়াচাঁপা। রাজেন ঘোষ, রমজান মোল্লারা এখন একযোগে বলছেন, “হিংসা আমাদের অনেক শিক্ষা দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত এতে কারও লাভ হয় না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন