‘দিদি কাজ করেছেন, ওরা করতে চায় না’

৩২টি পরিবারের বাস বলরামপুর ব্লক সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের কলাবেড়ায়। এক সময় বাসিন্দারা থাকতেন অযোধ্যা পাহাড়ের উপরে। এলাকাটা মাওবাদীদের ‘মুক্তাঞ্চল’ ছিল। বছর দুয়েক আগে গ্রামবাসীদের আনা হয়েছে পাহাড়তলিতে। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি হয়েছে। বিদ্যুৎ গিয়েছে। হয়েছে বাঁধানো রাস্তা। মিলছে দু’টাকা কিলোর চাল। তা হলে ক্ষোভ কেন?

Advertisement

প্রশান্ত পাল 

বলরামপুর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৩
Share:

সন্তান কোলে ফুলমণি পাহাড়িয়া। ছবি: সুজিত মাহাতো

‘নাগালে’ মুখ্যমন্ত্রী। জানে না কলাবেড়া। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বলরামপুর কলেজের মাঠে এসেছেন সে বার্তা পৌঁছয়নি কলাবেড়া গ্রামের ফুচি পাহাড়িয়া, সুরেন্দ্র পাহাড়িয়াদের কাছে। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘পাছে দিদিকে (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বলি, ‘আপনি আমাদের জন্য কাজ করেছেন। ওরা কিছু করতে চায় না’। সে জন্যই চেপে গিয়েছে।’’ ‘ওরা’ বলতে? জবাব, ‘‘তৃণমূলের এলাকার নেতা আর সরকারি অফিসারেরা।’’

Advertisement

৩২টি পরিবারের বাস বলরামপুর ব্লক সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের কলাবেড়ায়। এক সময় বাসিন্দারা থাকতেন অযোধ্যা পাহাড়ের উপরে। এলাকাটা মাওবাদীদের ‘মুক্তাঞ্চল’ ছিল। বছর দুয়েক আগে গ্রামবাসীদের আনা হয়েছে পাহাড়তলিতে। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি হয়েছে। বিদ্যুৎ গিয়েছে। হয়েছে বাঁধানো রাস্তা। মিলছে দু’টাকা কিলোর চাল। তা হলে ক্ষোভ কেন?

সুরেন্দ্র, ফুচিদের দাবি, পাহাড়তলিতে আনার পরেই, জীবিকার জন্য পরিবারপিছু পাঁচটি করে ছাগল দিয়েছিল ব্লক প্রশাসন। কিন্তু নানা রোগে সব ছাগল মরেছে। জানিয়ে লাভ হয়নি। সপ্তাহে কাঠ-পাতা বেচে বড়জোর সাড়ে পাঁচশো টাকা মেলে। সে রোজগার আর সরকারি চালের ভরসায় চলে সংসার। কারণ, জব-কার্ড থাকলেও মজুরির টাকা মিলতে ‘দেরির’ ভয়ে অনেকে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ করেন না। নিজস্ব জমি না থাকায় চাষের উপায়ও নেই।

Advertisement

আরও পড়ুন: দলনেত্রীর তোপ, সভায় যাননি সৃষ্টি

ফুলমণি পাহাড়িয়া, অজয় পাহাড়িয়া, সরুবালি পাহাড়িয়াদের ক্ষোভ, ‘‘তৃণমূলের নেতারা এখন গ্রামের ধারকাছ মাড়ান না। অফিসারেরা খোঁজ নিতে এসেছেন এক-আধ বার। সমস্যা মেটাননি। দিদিকে জানালে হয়তো উপায় হত।’’

আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের স্মৃতি উস্কে পথ ভরাল পদযাত্রা

বিডিও (বলরামপুর) ধ্রুবপদ শাণ্ডিল্যের বক্তব্য, ‘‘ওই গ্রামে গিয়েছি। ১০০ দিনের কাজ করায় ওঁদের অনেকের অনীহা রয়েছে।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘গ্রামবাসীদের নতুন করে ছাগল কিনে দেওয়া হবে। পোলট্রি ফার্মও হবে।’’ তৃণমূলের বলরামপুর ব্লক সভাপতি অঘোর হেমব্রমের বাড়ি কলাবেড়ার কাছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই গ্রামে আগে গিয়েছি। কিন্তু দলের কেউ এখন ওই গ্রামে যান না, জানতাম না। ওঁদের মুখ্যমন্ত্রীর সভায় আনার জন্য এক জনকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কেন ওঁরা এলেন না, দেখব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন