কাঁপুনি শহরে, জেলায় শৈত্যপ্রবাহের ভ্রুকুটি

দক্ষিণবঙ্গের কাঁপুনি বাড়িয়ে তরতরিয়ে নামছে পারদ। নিত্যদিনই ভেঙে যাচ্ছে শীতলতম মাত্রার রেকর্ড। এতটাই যে, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত তিনটি জেলায় শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা করছেন আবহবিদেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৮
Share:

দেরি: পথে বারবার আটকে থাকার পরে শুক্রবার বিকেলে শিয়ালদহে পৌঁছল বুধবারের রাজধানী এক্সপ্রেস। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

যখন ছিল না সে, ছিলই না। এ বার মহাসমারোহে আসর জমিয়ে সমানে তাল ঠুকছে শীত।

Advertisement

দক্ষিণবঙ্গের কাঁপুনি বাড়িয়ে তরতরিয়ে নামছে পারদ। নিত্যদিনই ভেঙে যাচ্ছে শীতলতম মাত্রার রেকর্ড। এতটাই যে, রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত তিনটি জেলায় শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা করছেন আবহবিদেরা। শুক্রবার কলকাতার পারদ থিতু হয়েছে ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, দমদমে ৯.৯ ডিগ্রি। দু’‌টোই স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি কম। হাওয়া অফিসের খবর, শীত বেশি দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায়। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৫ ডিগ্রি।

চলতি মরসুমে কলকাতায় সব থেকে বেশি ঠান্ডা ছিল এ দিনই। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আজ, শনিবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা আরও কিছুটা নামতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘শনিবার তাপমাত্রা আরও কিছুটা নামতে পারে। পুরুলিয়া, বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানে শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে আছড়ে পড়ল ‘বম্ব সাইক্লোন’, জারি সতর্কতা

আবহবিদেরা জানান, সাধারণত শীতকালে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি নীচে নামলেই বলা হয়, শৈত্যপ্রবাহ চলছে। বীরভূম, পুরুলিয়া, আসানসোলে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কমবেশি তিন ডিগ্রি নীচে রয়েছে। অচিরেই এক ধাক্কায় সেটা আরও দু’ডিগ্রি নেমে যেতে পারে। আচমকা পারদ পতনের ফলে বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে গাঢ় কুয়াশা তৈরি করছে। তার ফলে ব্যাঘাত ঘটছে ট্রেন ও বিমান চলাচলে। রেল সূত্রের খবর, দিল্লি থেকে হাওড়া ও শিয়ালদহে পৌঁছতে রাজধানী এক্সপ্রেসের ২১ ঘণ্টা দেরি হয়েছে।

এ বার ডিসেম্বরের গো়ড়া থেকেই ঝিমিয়ে ছিল শীত। মাঝেমধ্যে একটু গা-ঝাড়া দিলেও তা স্থায়ী হয়নি। ফলে বড়দিন ও বর্ষশেষে শীতের জন্য হাপিত্যেশ করতে হয়েছে বাঙালিকে। জানুয়ারির গোড়া থেকেই অবশ্য সেই আশা কিছুটা মিটতে শুরু করেছে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ঘূর্ণাবর্তের বাধা কেটে গিয়েছে। পশ্চিমি ঝঞ্ঝার (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ভারী হাওয়া) প্রভাবে কাশ্মীরে প্রবল তুষারপাত হচ্ছে। তার ফলে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে উত্তর ভারতে। উত্তুরে হাওয়ার ভর করে সেই ঠান্ডাই বয়ে আসছে পূর্ব ভারতে।

দিন দশেক পরেই পৌষসংক্রান্তি। শীতপ্রেমী বাঙালির প্রশ্ন, ক’দিন থাকবে এমন শীত? গত কয়েক বছর মকরসংক্রান্তিতে তেমন হা়ড়কাঁপানো শীত মেলেনি। আগের পৌষসংক্রান্তিতে কলকাতার পারদ নেমেছিল ১১.৯ ডিগ্রিতে। তবে দিনের বেলা মেঘলা থাকায় কনকনে ভাব মালুম হচ্ছিল। গণেশবাবু বলছেন, এ বার পৌষসংক্রান্তিতে কেমন ঠান্ডা থাকবে, তা এখনই নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আগামী দিন চারেক কলকাতার তাপমাত্রা ১০-১১ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকবে। গাঙ্গেয় বঙ্গের অন্যান্য জেলায় তাপমাত্রা আরও কিছুটা কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement