বছরভর হাতবদল আর গণধর্ষিত হতে হতে দিল্লির হাসপাতালে ফেলে যাওয়ার পরে বেঁচে গিয়েছিল ডায়মন্ড হারবারের কিশোরী আয়েশা। কিন্তু মালদহ থেকে পাচার হয়ে দিল্লিতে পরিচারিকার কাজ করতে গিয়ে নির্যাতিত অনামিকা (ছদ্মনাম)-র শেষ রক্ষা হল না। হাসপাতালে কয়েক দিনের চিকিৎসার পরে বুধবার সকালে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
মালদহের হবিবপুর থেকে পরিচারিকার কাজ করতে গিয়ে দিনের পর দিন বেধড়ক মার খেতে হয়েছিল বছর চব্বিশের অনামিকাকে। অভিযোগ, রোজই তাঁকে পেটাতেন গৃহকর্তা এবং তাঁর স্ত্রী। নির্মম মারধরে তাঁর একাধিক হাড় ভেঙে যায়। গুরুতর চোট লাগে তাঁর মেরুদণ্ডে। প্রথমে তাঁকে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিরই এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)-এ চিকিৎসা চলছিল তাঁর। অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি হওয়ায় ২৯ ডিসেম্বর তাঁকে ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই এ দিন মারা যান ওই নির্যাতিতা।
দিল্লির মহিলা কমিশন ও দিল্লি পুলিশে সূত্রের খবর, কাজ দেওয়ার নাম করে ওই তরুণী আসলে পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েছিলেন। পরে তাঁকে বেচে দেওয়া হয়। তিনি যে-বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন, সেখানে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয় তাঁকে।
মহিলা কমিশন ও রাজ্যের হয়ে অনামিকার দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংস্থার তরফে ঋষিকান্ত এ দিনও ‘ডোমেস্টিক প্লেসমেন্ট অ্যাক্ট’-এর প্রয়োজনের কথা তোলেন। দুই তরফেরই বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লি সরকারের মধ্যে সমঝোতাপত্র সই করে তাড়াতাড়ি এই আইন চালু করা উচিত। নইলে এমন পাচার বাড়বে। বিভিন্ন রাজ্য বারবার অত্যাচারিত হতে থাকবেন বাংলার মেয়েরা। শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হবে পরিত্যক্ত অবস্থায়।