বিপ্লব সরকার: গুলিবিদ্ধ তৃতীয় জন। দাড়িভিট হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র
বৃহস্পতিবারের আতঙ্ক এখনও আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। আমার মনে হয়, পুলিশের পোষাকে বহিরাগত গুন্ডা এনে আমাদের হামলা করা হয়েছে। জীবনে কখনও পুলিশকে এত নির্মম হতে দেখিনি। পুলিশ সম্পর্কে আমার ধারণা নিমেষে বদলে গেল!
দুপুরের পরে পুলিশ আসে। স্কুলের শিক্ষকরাও স্কুলের গেট খুলতে অনুরোধ করে। আমরা আমাদের দাবিতে অনড় ছিলাম। পুলিশ এসে আমাদের হুমকি দিতে শুরু করে। তারা বলছিল, ‘‘কিছু ক্ষণ পরই খেলা শুরু হবে।’’ তখনও বুঝিনি কী হতে চলেছে আমাদের সঙ্গে। এরপরই বিশাল পুলিশ বাহিনী স্কুলে হাজির হয়। পোক্ত ছোট গাড়ি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ধাওয়া করা হয়। চোখের সামনে স্কুলের ছাত্রীদের গায়ে হাত দেওয়া হচ্ছিল। তাদের মারধর করছিল পুলিশের লোকজনেরা। এরপরই পুলিশ গুলি চালাতে শুরু করে। চোখের সামনেই দু’জনকে গুলিতে আক্রান্ত হতে দেখি। তৃতীয় গুলিটি আমার বাঁ পায়ে হাঁটুর নীচে এসে লাগে। এফোঁড়ওফোঁড় হয়ে যায় গুলি। এখানকার ডাক্তাররা বলছেন, আমার পা আর ঠিক হবে না।
স্কুলে গত চার দিন থেকেই উর্দুর শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছিল। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলাম। আন্দোলনের জেরে ক’দিন থেকেই ক্লাস হচ্ছিল না। প্রথম দিন পুলিশ না আসলেও দ্বিতীয় দিন এসেছিল। কিছু ক্ষণ থেকে তারা চলেও যায়। এরপর তৃতীয় দিন আন্দোলন চললেও পুলিশ আসেনি। আমরা স্কুলে অন্য দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলাম। তারপরেই এই কাণ্ড হল।