ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড তৈরি নিয়ে গোলমালের পরে আর ঝুঁকি নিতে রাজি নয় রাজ্য সরকার! যে সব এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, সেখানে বিদ্যুতের খুঁটি বা তার টানার আগে স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে, তাঁদের সম্মতি নিয়েই এগোতে চাইছে বিদ্যুৎ দফতর। যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে সমস্যা রয়েছে, সেখানে স্থানীয় বিধায়কদেরই প্রথমে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিধানসভায় বুধবার বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিদ্যুতের তার টানার ক্ষেত্রে এখনও কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত তা মেটাতে স্থানীয় বিধায়কদের অনুরোধ করা হয়েছে। এর জন্য বেশ কিছু বিধায়ককে চিঠিও দেওয়া হচ্ছে।’’
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, শাসক ও বিরোধী মিলিয়ে জনা চল্লিশেক বিধায়ককে চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে। ৪০ জনের সংখ্যাগরিষ্ঠই শাসক দলের। দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনার পাশাপাশি দুই মেদিনীপুর এবং উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে সমস্যা রয়েছে বলে দফতর সূত্রের খবর। শাসক শিবিরেরই একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, বিরোধীদের চেয়েও শাসক দলের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে নিয়ে এখন সরকারের মাথাব্যথা বেশি! সেই জন্য বেশির ভাগ তৃণমূল বিধায়কের কাছ থেকেই সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে। বিশেষত, ভাঙড়ে তৃণমূলের স্থানীয় গোষ্ঠী সমীকরণ কী ভাবে সমস্যা জটিল করেছে, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এগোতে চাইছে বিদ্যুৎ দফতর। প্রসঙ্গত, ভাঙড়-কাণ্ডের পরে সংলগ্ন এলাকায় আজ, বৃহস্পতিবারই প্রথম সভা করার কথা শাসক দলের।
বিদ্যুৎমন্ত্রী এই চিঠিকে কোনও ভাবেই ভাঙড়-পরবর্তী পদক্ষেপ বলে মানতে নারাজ। সভার পরে শোভনদেবের দাবি, ‘‘তার টানার সময় বাধা দেওয়ার ঘটনা সারা বিশ্বময় ঘটছে। আমাদের রাজ্যেও এই সমস্যা স্বাভাবিক। আর বিধায়কদের নিজের এলাকার সমস্যা নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করাটা পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে ভাঙড়ের যোগ নেই।’’
যে চিঠি বিদ্যুৎ দফতর থেকে বিধায়কদের দেওয়া হচ্ছে, তাতে লেখা হয়েছে, ‘সার্বিক বিদ্যুদয়নের কাজ প্রায় শেষের মুখে। বাকি অংশের মধ্যে তার টানার সমস্যাই বেশি। এ কাজ করতে আপনার সক্রিয় হস্তক্ষেপ প্রয়োজন’। এলাকা ধরে সমস্যা মেটাতে স্থানীয় সাংসদ এবং অন্যান্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সঙ্গেও কথা বলতে অনুরোধ করা হয়েছে বিধায়কদের।