২০১৭ সালে ছিল নবম স্থানে। ২০১৮ সালে তিন ধাপ নেমে পৌঁছয় দ্বাদশে। আর এ বছর রয়েছে চতুর্দশ স্থানে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের র্যাঙ্কিং (এনআইআরএফ)-এ পরপর দু’বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অবনমন ঘটেছে এ ভাবেই। দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ধারাবাহিক অবনমন কেন? শিক্ষা শিবিরের ধারণা, নতুন পিএইচ ডি প্রার্থীর স্বল্পতা এবং যথেষ্ট পরিমাণ গবেষণাপত্রের অভাবও এর কারণ। পিএইচ ডি প্রার্থী কম কেন? কেনই বা অভাব পড়ছে গবেষণাপত্রের? আসলে যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে বেশ কিছু দিন ধরে নতুন পিএইচ ডি করতে চাওয়া ছাত্রছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনই হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই একাংশ বেজায় ক্ষুব্ধ। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সমিতি এবং শিক্ষক সমিতির তরফে সেই ক্ষোভের কথা জানানো হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যকে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০১৬ সালে ইউজিসি-র পিএইচ ডি সংক্রান্ত বিধি সংশোধনের পরে যাদবপুর নিজেদের মতো করে সেই বিধি গ্রহণের বিষয়েই বেশ খানিকটা দেরি করে ফেলেছিল। ২০১৭ সালে এক বার কিছু রেজিস্ট্রেশন হয়। কিন্তু তার পরে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে আগে থেকেই গবেষণা শুরু করা এক গবেষকের নাম রেজিস্ট্রেশনের তালিকায় না-থাকায় জটিলতার সৃষ্টি হয়। তারও পরে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের এক অধ্যাপক দাবি তোলেন, যত পদ সংরক্ষিত, তার থেকে আবেদন কম পড়লে সব আবেদনকারীকেই নেওয়া হোক। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ প্রায় দেড় বছর ধরে রেজিস্ট্রেশন করার প্রক্রিয়াটিই বন্ধ রেখেছেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা)-র প্রতিনিধিরা এ দিন বিষয়টি নিয়ে ডিন চিরঞ্জীববাবুর সঙ্গে দেখা করেন। জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, ডিনকে তাঁরা জানিয়ে এসেছেন, রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া ২ মে-র মধ্যে চালু করতে হবে। নইলে ৩ মে জুটা অবস্থানে বসবে। রেজিস্ট্রেশন না-হওয়ায় যে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সমিতি (জুরসা)-ও এ দিন ডিনকে তা জানিয়েছে। ওই সংগঠনের সহকারী সাধারণ সম্পাদক শুভদীপ দাস জানান, রেজিস্ট্রেশন না-হওয়ায় গবেষণার জন্য বিভিন্ন ফেলোশিপ পাচ্ছেন না গবেষকেরা। অনেকে ফেলোশিপ পেলেও রেজিস্ট্রেশন না-হওয়ায় তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গবেষণার কাজ প্রায় শেষ করে ফেলা সত্ত্বেও রেজিস্ট্রেশন না-হওয়ায় অনেকেরই গবেষণাপত্র জমা দিতে অনেক বেশি সময় লেগে যাবে। তাই অবিলম্বে রেজিস্ট্রেশন চালু করার আবেদন জানানো হয়েছে। গবেষকেরা যে অসুবিধার মুখে পড়েছেন, তা স্বীকার করেছেন ডিন চিরঞ্জীববাবু। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট কমিটি বুধবার (আজ) আলোচনায় বসছে।’’