মোদীর সভার মাঠে এখনও হেলিপ্যাড, প্লাস্টিক পাউচ

এলাকার কৃষক বিভূতি মণ্ডলের প্রশ্ন, “কত দিনে এই জমি চাষের যোগ্য হবে কে জানে!”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়নাগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৬
Share:

বেহাল: প্রধানমন্ত্রীর সভার পরে আলুখেতের অবস্থা। ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

এই জমিতে তৈরি হয় তিনটি হেলিপ্যাড। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তিনটি হেলিকপ্টার নেমেছিল সেখানে। পাশের মঞ্চ থেকে বক্তৃতা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। লক্ষাধিক লোকের ভিড় জোটানোর দাবি করে স্থানীয় বিজেপি নেতারা প্রশংসাও কুড়িয়েছেন। কপ্টার উড়ে যাওয়ার পরে সেই নেতারাও ফিরে গিয়েছেন। কেটে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। এখন খেত জুড়ে কংক্রিটের তিনটি হেলিপ্যাডের সঙ্গে ছড়িয়ে আছে প্লাস্টিকের পাউচ, বিজেপির ফ্ল্যাগ, প্রচুর কাগজও।

Advertisement

এলাকার কৃষক বিভূতি মণ্ডলের প্রশ্ন, “কত দিনে এই জমি চাষের যোগ্য হবে কে জানে!”

স্থানীয় চাষিদের বক্তব্য, এক একটি হেলিপ্যাড তৈরি করতে মাটি খুঁড়ে প্রায় ৪০ হাজার ইট ঢোকানো হয়েছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, তিনতলা বাড়ির ভিত করতে এতটা গর্ত খোঁড়া হয়। তিন ফসলি জমিতে এই কংক্রিট হেলিপ্যাড যত বেশি দিন থাকবে, দুঃখ ততই বাড়বে, বলছেন চাষিরা।

Advertisement

হেলিপ্যাডের পাশেই বাড়ি ভূপেন রায়ের। তিনি বললেন, “স্থানীয় বিজেপি নেতারা বলেছিলেন, সভার পরেই কংক্রিটের আস্তরণ মেশিন দিয়ে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু এ দিন তো কারও দেখা পেলাম না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই পুরু ইটের গাঁথনি আমাদের পক্ষে তুলে ফেলা সম্ভব নয়।”

বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি গোস্বামীর অবশ্য দাবি, “জমি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।” মাঠের পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপিকে পাল্টা চাপ দিতে আসরে নেমেছে তৃণমূল। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, “চাষিদের বলেছিল, ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তৃণমূল আপনাদের পাশে আছে।”

যদিও বৃষ্টির মধ্যে শনিবার মাঠের ধারেকাছে বিজেপি নেতাদের দেখা যায়নি বলে স্থানীয় চাষিদের দাবি। তাঁদের বেশি আশঙ্কা প্লাস্টিক পাউচ নিয়ে। জমির উল্টো দিকেই কৈলাস রায়ের বাড়ি। তাঁর কথায়, “কাগজ যে ছড়িয়ে রয়েছে, সে সব তো পচে যাবে মাটিতে মিশে যাবে। কিন্তু প্লাস্টিক সব থেকে বিপজ্জনক।”

কত পাউচ ছড়িয়ে আছে? চাষিদের দাবি, লক্ষাধিক মানুষ যদি এসে থাকেন, তা হলে জলের পাউচের সংখ্যাও তেমনই হবে। এক কৃষকের কথায়, “একটা-দু’টো হলে নিজেরাই কুড়িয়ে নিতাম। কিন্তু এত কুড়োব কী করে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন