মমতা ও মোদী একই, বোঝালেন রমেশ

আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূল সম্পর্কে দলের অবস্থান কী হবে, সেই প্রশ্নে কংগ্রেসের অন্দরে টানাপড়েন বাড়ছে। দলের একাংশ যখন তৃণমূলের অপশাসনের মোকাবিলায় প্রয়োজনে বামেদের সঙ্গে কৌশলগত সমঝোতার পক্ষপাতী, কংগ্রেস বিধায়কদের মধ্যে আর একাংশ আবার চাইছে পুরনো বন্ধু তৃণমূলের দিকেই ফিরে যেতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০৪:১১
Share:

আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূল সম্পর্কে দলের অবস্থান কী হবে, সেই প্রশ্নে কংগ্রেসের অন্দরে টানাপড়েন বাড়ছে। দলের একাংশ যখন তৃণমূলের অপশাসনের মোকাবিলায় প্রয়োজনে বামেদের সঙ্গে কৌশলগত সমঝোতার পক্ষপাতী, কংগ্রেস বিধায়কদের মধ্যে আর একাংশ আবার চাইছে পুরনো বন্ধু তৃণমূলের দিকেই ফিরে যেতে। এমতাবস্থায় দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর রাজ্য সফরের আগে কলকাতায় এসে নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়কে এক বন্ধনীতে বসিয়ে দিয়ে গেলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। তাঁর বক্তব্যকে একই সঙ্গে রাহুলের মনোভাবের ইঙ্গিত এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে বার্তা বলে মনে করছে কংগ্রেসের একাংশ।

Advertisement

মোদী সরকারের এক বছরের ‘সাফল্য’তুলে ধরতে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা সারা দেশে প্রচারে নেমেছেন। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও নানা রাজ্য ঘুরে মোদী সরকারের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে পাল্টা প্রচার চালাচ্ছেন। সেই কাজেই রবিবার কলকাতায় এসে রমেশ বোঝাতে চেয়েছেন, মোদী ও মমতা একই মুদ্রার দুই পিঠ। দুই স্বৈরতান্ত্রিক শাসকের মধ্যে আঁতাঁতও হয়েছে। এই প্রসঙ্গেই গত কয়েক মাসে সারদা-তদন্তের শ্লথ গতির অভিযোগ এনেছেন রমেশ। এমন প্রচার পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সম্ভাবনায় জল ঢালছে বুঝে শনিবারই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন, বিজেপি-তৃণমূল কোনও রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্ন নেই। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে বসে রমেশ পাল্টা বলেছেন, ‘‘এ দেশের রাজনীতিতে অরুণ জেটলি খুবই ভাল স্পিনার। উনি যেটা বলেন, বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটা হয়! জেটলি যে হেতু বলেছেন কোনও বোঝাপড়া হয়নি, তা থেকেই আমি নিশ্চিত, অবশ্যই হয়েছে! তা না হলে হঠাৎ এই স্থিতাবস্থা কেন!’’

অজ্ঞাতবাস থেকে ফিরে আসা ইস্তক বিগত সওয়া এক মাসে মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে দেশের নানা প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন রাহুল। কলকাতায় তাঁর আসার কথা ৬ জুন। তাঁর সফরের আগেই কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতারা একের পর এক বাংলায় আসছেন। তার মধ্যে রমেশ যে ভাবে এ দিন মোদী-মমতা জুটিকে নিশানা করছেন, তাকে রাহুলের সফরের উদ্বোধনী সঙ্গীত বলেই মনে করা হচ্ছে কংগ্রেস শিবিরে। কংগ্রেস কর্মীদের বার্তা দিতে কলকাতায় এসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কর্মিসভা করবেন রাহুল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিনই জানিয়েছেন, মেয়ো রোডে গাঁধীমূর্তিতে মালা দিয়ে রাজ্যের ধান ও আলুচাষিদের সঙ্গে নিয়ে ইন্ডোর পর্যন্ত মিছিল করার কথা রাহুলের। তার আগে রিষড়ায় গিয়ে হুগলি শিল্পাঞ্চলে বন্ধ চটকলের শ্রমিকদের যন্ত্রণাও ভাগ করে নিতে চান তিনি।

Advertisement

তার আগে স্পষ্ট বার্তাই দিয়েছেন রমেশ। তিনি বলেছেন, পদ্ম এবং ঘাসফুল একই মুদ্রার দু’টো দিক।

রাহুলের সফরের আগে রমেশদের আক্রমণের মুখে পড়ে কংগ্রেসকে ‘অস্তিত্বহীন দল’ বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। ডেরেক ও’ব্রায়েনের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-র মতাদর্শ আলাদা। তৃণমূল জনস্বার্থমুখী দল, যাদের মতাদর্শ আলাদা। বিজেপি-তৃণমূলের তুলনা না করলেই কংগ্রেস ভাল করবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন