Narendra Modi Durgapur Rally

বঙ্গের কৃষি নিয়েও উদ্বেগ মোদীর

দুর্গাপুরে জনসভার মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে দেশের মধ্যে শিল্পোন্নত রাজ্য হবে পশ্চিমবঙ্গ। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ০৭:১০
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে এসে কার্যত বিধানসভা নির্বাচনের বাদ্যি বাজিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুর্গাপুরে জনসভার মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে দেশের মধ্যে শিল্পোন্নত রাজ্য হবে পশ্চিমবঙ্গ। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বাম জমানায় মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন শিল্পায়নের পথে এগোতে চেয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তাঁর উদ্যোগ ধাক্কা খেয়েছিল। বরং, কৃষি জমি সংক্রান্ত আবেগকে সামনে রেখে আন্দোলন করে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসেছিলেন। তাঁর সেই আন্দোলনের অন্যতম সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারী এখন বিরোধী দলনেতা।

অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামের সরকারি মঞ্চ। সেখান থেকে মূল মঞ্চে জনসভা পর্যন্ত মোদীর সঙ্গেই ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু-সহ কয়েক জন শীর্ষ নেতা। রাজ্য বিজেপির এক সূত্রের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য নেতাদের বিশ্লেষণ জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বার্তা, সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষকে একজোট করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার কী কী উন্নয়ন করেছে, পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে কী কী উন্নয়ন হবে, সেই বার্তা তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, শিল্পোন্নয়ন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান— এই তিনটি বিষয়ে জোর দিতে। শিল্পমহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে, বিজেপি ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গকে বিনিয়োগ-বান্ধব রাজ্য গড়ে তুলতে চায়। বিজেপি সূত্রের মতে, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে এখন যে হইচই শুরু হয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে রাজ্যের শিল্পায়ন, কৃষি ও কর্মসংস্থানের কথা বলে ‘ইতিবাচক’ প্রচারের বার্তা দিয়েছেন মোদী।

রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস বা বিরোধী সিপিএম অবশ্য বিজেপির এই প্রচার-কৌশলের ‘বাস্তবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তাদের বক্তব্য, কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের আমলে একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে অন্ধকার নেমে এসেছে। যে দুর্গাপুরে মোদী সভা করে গেলেন, সেই শিল্পাঞ্চলে নজর করলেই এই ছবি পাওয়া যাবে। কর্মসংস্থান বেহাল। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মানলে এত দিনে ২২ কোটি চাকরি হওয়ার কথা ছিল, কার্যক্ষেত্রে হয়েছে ২২ লক্ষ! এর পরে বিজেপির আশ্বাস রাজ্যের মানুষ বিশ্বাস করবেন না বলেই তৃণমূল ও বাম শিবিরের দাবি।

প্রধানমন্ত্রী এ বার পশ্চিমবঙ্গের কৃষি-পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে সূত্রের খবর। দলের নেতাদের তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের কৃষি জমির দ্রুত চরিত্র বদল হচ্ছে। ক্রমশ উর্বরতা হারাচ্ছে চাষযোগ্য জমি। পশ্চিমবঙ্গে কৃষি জমির উপর বিরাট অংশের মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের ভোটারের সংখ্যাও বাড়ছে। বিজেপি শিবিরের একাংশের মতে, এই দুই বড় অংশকে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসতে কৃষি এবং শিল্পায়নে সমান্তরাল জোর দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন মোদী।

বিজেপির রাজ্য সভাপতিও প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে বলেছেন, ‘‘বাংলা নিজের সন্তানকে বাড়িতে রেখে বাড়ির ভাত খাওয়াতে চায়। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, আমাদের ৬০-এর দশকের দুর্গাপুর, আসানসোল শিল্পাঞ্চল ফিরিয়ে দিন!’’ যদিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘মাত্র কয়েক মিনিট কথা বলার সুযোগ হয়েছে। দলের কথা হয়েছে। রাজ্যের বিষয়েখোঁজ নিয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন