Pradhan Mantri Aawas Yojna

আবাসে টাকায় দেরি, জরিমানার শঙ্কা বঙ্গে

প্রশাসনিক হিসেব অনুযায়ী জরিমানার প্রশ্ন উঠলে প্রায় ১১ লক্ষ বাড়ির প্রথম কিস্তির জন্য এখনই এক কোটিরও বেশি টাকার বাড়তি বোঝা রাজ্যের ঘাড়ে চাপার আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:০৭
Share:

ভবিষ্যতে এই নিয়ে বিপুল অঙ্কের জরিমানা চাপার আশঙ্কা দানা বাঁধছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে। ফাইল চিত্র।

যৌথ আবাস প্রকল্পে নিজেদের প্রদেয় অংশ থেকে বাংলাকে প্রথম কিস্তির টাকা এখনও দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ তাদের শর্ত অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাড়তে না-পারায় জরিমানার মুখে পড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ওই যোজনার অনুমোদন দেওয়ার সঙ্গেই কেন্দ্রের লিখিত হুঁশিয়ারি ছিল, প্রকল্পে টাকা ছাড়তে দেরি হলে রাজ্যের জরিমানা হবে। কিন্তু কেন্দ্র প্রথম কিস্তির টাকা না-ছাড়ায় তাদেরই বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে সপ্তাহ খানেক আগে। ফলে ভবিষ্যতে এই নিয়ে বিপুল অঙ্কের জরিমানা চাপার আশঙ্কা দানা বাঁধছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে। এই পরিস্থিতির ‘দায়’ কার, তা নিয়ে চলছে জল্পনা ও আলোচনা।

Advertisement

প্রশাসনিক হিসেব অনুযায়ী জরিমানার প্রশ্ন উঠলে প্রায় ১১ লক্ষ বাড়ির প্রথম কিস্তির জন্য এখনই এক কোটিরও বেশি টাকার বাড়তি বোঝা রাজ্যের ঘাড়ে চাপার আশঙ্কা রয়েছে। আবার প্রথম কিস্তির অর্থ ছাড়তে যত দেরি হবে, তত এগিয়ে আসবে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় কিস্তির টাকা ছাড়ার সময়। কেন্দ্রের স্থির করে দেওয়া সময়ের মধ্যে সব বাড়ি তৈরি করে দেওয়া শর্তও আছে। জরিমানার বিষয়টি গত ১ অক্টোবর থেকে বলবৎ করেছে কেন্দ্র। ফলে তারা নমনীয় না-হলে পরে বাকি ধাপগুলির ক্ষেত্রেও সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

কেন্দ্র জানিয়েছিল, অনুমোদনে এক মাসের দেরিতে বাড়ি-পিছু ১০ টাকা এবং পরের মাস থেকে ২০ টাকা করে জরিমানা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রায় ১১ লক্ষ বাড়ির অনুমোদন দেওয়ায় নবান্নের সামনে সেই সমস্যা নেই। তবে কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী প্রথম কিস্তির টাকা দিতে সাত দিন দেরি হলে প্রতি সপ্তাহে বাড়ি-পিছু ১০ টাকা জরিমানা হবে। সূচি মানলে ৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার কথা ছিল উপভোক্তাদের। কিন্তু সেটা এখনও তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি। তাই দেখা দিয়েছে জরিমানার আশঙ্কা। আবার কেন্দ্রের নিয়মে প্রথমের থেকে দ্বিতীয় কিস্তিতে তিন মাস দেরি হলে প্রতি মাসে বাড়ি-পিছু ১০ টাকা এবং দ্বিতীয়ের থেকে তৃতীয় কিস্তিতে দু’মাস দেরি হলে বাড়ি-পিছু প্রতি মাসে ১০ টাকা জরিমানা হবে। বাড়ি তৈরির প্রতিটি পর্যায়ের প্রমাণে দেরি হলেও জরিমানা হবে অনুরূপ ভাবে।

Advertisement

রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, প্রথম কিস্তির টাকা কেন্দ্র ঠিক যে-দিন ছাড়বে, সাত দিনের সময়সীমার হিসেবটা সেই দিন থেকে হওয়া জরুরি। এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “অনুমোদনের সময় অন্তত ১০টি বৈঠক করেছিল কেন্দ্র। সব ক্ষেত্রে ছিল সময়ের মধ্যে টাকা ছাড়ার হুঁশিয়ারি। রাজ্য নিজেদের বরাদ্দ হিসেবে এক হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতে নিয়ে প্রস্তুত আছে। কিন্তু কেন্দ্র প্রথম কিস্তিতে তাদের প্রদেয় টাকা না-দিলে নিজেদের অর্থ এই খাতে খরচ করা যাচ্ছে না। এই বিষয়ে কেন্দ্রকে একাধিক বার চিঠি লিখেছে নবান্ন। এ দায় তো রাজ্যের হতে পারে না!” পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্ধারিত কোটার অনুমোদন শুধু এ রাজ্যই দিতে পেরেছে। বাকিদের অনেক বাকি। কেন্দ্রের নিয়মে সেই সব রাজ্যের অসমাপ্ত কোটা তো আমাদের পাওয়ার কথা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন