সামান্য একটা ঘটনা। তার জেরেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে সোমবার দুপুরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বেলুড়। থানার সামনেই চলল গুলি। মুড়িমুড়কির মতো হল ইটবৃষ্টি। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছল যে, পুলিশও দরজা এঁটে সিঁটিয়ে থাকল থানার ভিতরে। প্রায় এক ঘণ্টা তাণ্ডব চলার পরে বিশাল পুলিশবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানায়, সংঘর্ষে আহত চার জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দু’জনকে আটক করা হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, এটা তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জের। যদিও তৃণমূল তা অস্বীকার করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ। লিলুয়ার মাতোয়ালা চৌরাস্তার কাছে তীব্র গতিতে আসা পুলকারের সঙ্গে একটি মোটরবাইকের ধাক্কা লাগে। বাইক আরোহী পড়ে যান। পুলকার না-থামিয়ে চম্পট দেন চালক। অসিত জানা নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বাইকচালক হরেরাম রাইকে তুলে পুলকারের পিছনে ধাওয়া করে চালককে পাকড়াও করেন। অভিযোগ, পুলকার চালককে ক্ষমা চাইতে বললে তিনি উল্টে অসিত ও হরেরামকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেন।
সেই সময় সেখানে হাজির হন হাওড়া পুরসভার ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর রাজীব থামানের ঘনিষ্ঠ এক যুবক। অন্য দিকে তাঁর এলাকার লোককে মারধর করা হচ্ছে শুনে পৌঁছে যান ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর কৈলাস মিশ্র। বেলুড় থানার পুলিশ এসে পুলকার চালক ও রাজীবের ঘনিষ্ঠ যুবককে আটক করে নিয়ে যায়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দুপুর দেড়টা নাগাদ আটকদের ছাড়াতে দলবল নিয়ে থানায় হাজির হন রাজীব। তার আগেই থানায় গিয়ে বসে ছিলেন কৈলাস। দু’জনে মুখোমুখি হতেই বচসা শুরু হয়। বাইরে দু’পক্ষের মধ্যেও রড, লাঠি নিয়ে মারামারি, ইটবৃষ্টি শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দু’রাউন্ড গুলিও চলে।
ওসি তখন নির্বাচন সংক্রান্ত বৈঠকে বাইরে ছিলেন। বাকি পুলিশ কর্মীরা থানার গেটে তালা দিয়ে ভিতরে সিঁটিয়ে বসে থাকেন। দীর্ঘ ক্ষণ সংঘর্ষ চলার পরে খবর পেয়ে ওসি ফিরে আসেন। বালি ও মালিপাঁচঘড়া থেকেও বিশাল পুলিশবাহিনী আসে।
কৈলাসের অভিযোগ, ‘‘রাজীব ধৃতদের ছাড়াতে দলবল নিয়ে এসেছিল। ওঁরা আমাদের ছেলেদের মারধর করে, গুলি চালায়।’’ রাজীবের পাল্টা দাবি, ‘‘ওরা রিভলভার নিয়ে তাড়া করে, গুলি চালায়। আমাদের চার জন হাসপাতালে ভর্তি।’’ গুলি চালানোর কথা অবশ্য মানেননি হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (উত্তর) অমিত রাঠৌর। আর তৃণমূল জেলা সভাপতি অরূপ রায় বলেন, ‘‘এটা কোনও গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব নয়।’’