মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছেন পুলিশ কর্তারা। দিন তিনেক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার তিনটি অঞ্চলকে আলাদা করে তিনটি পুলিশ জেলা তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। অভিযোগ, কোনও রকম পরিকাঠামো ছাড়াই কাজ শুরু করা নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই দেখা দিয়েছে নানা বিপত্তি।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত বারুইপুর জেলা পরিষদ ভবনে অস্থায়ী ভাবে কাজ শুরু করেছেন নতুন বারুইপুর জেলার পুলিশ সুপার। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ভবনের দোতলা ও পাঁচ তলায় আপাতত পুলিশ সুপারের অস্থায়ী একটি অফিস করা হয়েছে। তবে শুধুই অফিস। কোনও করণিক নেই। এমনকী, চেয়ার টেবিলেরও ব্যবস্থা হয়নি। আপাতত পুলিশ সুপার একাই একটি ঘরে কোনও রকমে কাজ করছেন।
জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘বারুইপুরের পুলিশ সুপারের জন্য তাও তো একটি অফিসের ব্যবস্থা করা গিয়েছে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ সুপার তো সেচ দফতরের বাংলোয় বসে কাজ করেছেন!’’
ডায়মন্ড হারবারের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও গভীর। ওই জেলার বেশির ভাগ থানাই কলকাতা লাগোয়া। তার মধ্যে কলকাতা লাগোয়া বজবজ, মহেশতলা, রবীন্দ্রনগর, বিষ্ণুপুর, নোদাখালির মতো থানা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ সুপারের অফিস ডায়মন্ড হারবারে তৈরি হলে সমস্যা তৈরি হবে। বড় কোনও সমস্যার ক্ষেত্রে প্রায় ঘণ্টা খানেক সময় খরচ করে সাধারণ নাগরিকদের ডায়মন্ড হারবারে সুপারের অফিসে পৌঁছতে হবে। এ ছাড়াও এলাকার থানার অফিসারদের নিয়ে মাঝেমধ্যেই বৈঠক করতে হয় পুলিশ সুপারকে। সে ক্ষেত্রে থানার পুলিশ অফিসারদেরও এক ঘণ্টা পেরিয়ে সেই বৈঠকে যেতে হবে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, এই সমস্যার বিষয়টি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে। কলকাতা লাগোয়া বিষ্ণুপুর এলাকায় ডায়মন্ড হারবার পুলিশ সুপারের অফিস তৈরি ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেই বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে।
কুলপিতে ‘পথের-সাথী’ নামে একটি ফ্লোটেলে সুন্দরবন পুলিশ সুপারের অস্থায়ী অফিস তৈরি করা হয়েছে। তবে পুলিশ সুপার এখনও সেখানে কাজে যোগ দেননি। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, আপাতত ওই ফ্লোটেলটিই পুলিশ সুপারের অস্থায়ী অফিস বলেই বিবেচনা করা হয়েছে।
কোনও রকম পরিকাঠামোর ব্যবস্থা না করেই তড়িঘড়ি পুলিশ জেলার কাজ শুরু করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ছোট-বড় পুলিশ কর্তারা। নিচুতলার পুলিশকর্মীরাও ক্ষুদ্ধ। আলিপুর সদর দফতরে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা দফতর (ডিআইবি) সদর অফিস ছিল। ওই অফিসের কর্মীদেরও তিন ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কলকাতার কাছাকাছি অফিস থেকে এখন অধিকাংশ কর্মীকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বদলি করা হচ্ছে। ওই কর্মীরা কোন অফিসে বসবেন, তা এখনও স্থির করা হয়নি। ওই দফতরের কর্মীদের কথায়, ‘‘এতটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তথ্য অনুসন্ধানের কাজ করতে হয়। কোনও অফিস না থাকায় কী ভাবে সেই কাজ করা হবে, তা বুঝতে পারছি না।’’