মনুয়া মজুমদার
খুনের পর থেকেই মিলছিল না অনুপম সিংহের তিনটি মোবাইল। যার মধ্যে একটি দিয়েছিল তাঁর স্ত্রী মনুয়া মজুমদার। মনুয়াকে জেরা করে একটি ফোনেরও হদিস মিলছিল না। অবশেষে ওই মহিলার প্রেমিক অজিত রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনুপমের একটি ফোন উদ্ধার করছে পুলিশ। খুনের আগে মনুয়া ও অনুপমের মধ্যে কখন ও কতক্ষণ কথা হয়েছিল, ওই মোবাইল থেকে জানা গিয়েছে তা-ও। অনুপমের সেই ফোনের ইনবক্স ঘেঁটেও বেশ কিছু তথ্য উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাংলাদেশের বাসিন্দা, সরল স্বভাবের স্বামী অনুপমকে একেবারেই পছন্দ ছিল না মনুয়ার। বাংলাদেশ থেকে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন প্রায়ই অনুপমের বাড়িতে আসত।
তাঁদের আদর-আপ্যায়ন করতে বিরক্তও হতো মনুয়া।
শুধু তা-ই নয়, বিয়ের আগে তাদের পরিবারে মদ্যপানের রেওয়াজ ছিল বলে জানিয়েছে মনুয়া। বন্ধুদের আড্ডাতেও মাঝেমধ্যে মদ্যপান করত সে। অন্য দিকে, অনুপম ও তাঁর পরিবার ছিল এ সবের থেকে দূরে।
পুলিশকে মনুয়া জানিয়েছে, অনুপমের ‘গেঁয়ো মার্কা’ মানসিকতার জন্য সে ঝুঁকেছিল অজিতের দিকে। অজিতের সঙ্গে একাধিক বার মদ্যপানও করে মনুয়া। মনুয়া-অজিতকে জেরার পরে এমনই সব কথা জেনেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ফি মাসে তিনটি বৈঠক করতে বললেন অনুব্রত
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার বলেন, ‘‘মনুয়া এখনও ভাবলেশহীন। অনেক কথারই জবাব দিচ্ছে না। অজিত কিছুটা ভেঙে পড়েছে বলে অনেক কথাই স্বীকার করে নিয়েছে। অজিতকে জেরা করে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তথ্য যাচাইও করছে পুলিশ।’’
তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, জেরায় অজিত তাঁদের জানিয়েছে, খুনের দিন অনুপমের ঘরে মনুয়ার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও হয় তার। সেই সময়ে মনুয়া দাবি করে, ‘আমাকে পুরোপুরি পেতে গেলে অনুপমকে সরাতেই হবে।’ অজিতের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতিও আদায় করে মনুয়া। জেরায় অজিত তদন্তকারীদের আরও বলেছে, ‘‘এর পরেই আমার মধ্যে খুনের মানসিকতা তৈরি হয়।’’
অজিতের মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান থেকে পুলিশ জেনেছে, খুনের পরে সে একাধিক বার সোনাগাছির যৌনপল্লিতে গিয়েছিল। সে তথ্য যাচাইও করেছে পুলিশ। অজিতের অবশ্য দাবি, খুনের পরে অনুশোচনা ও পুলিশের ভয়ে যৌনপল্লিতে গিয়ে মদ্যপান করে রাত কাটিয়েছে সে।