—প্রতীকী ছবি।
জোরে বাস ব্রেক কষায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। এখনই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরি। নাহলে বড় বিপদ ঘটতে পারে—পুরুষ কন্ঠের এই আবেদন শুনেই আর দেরি করেননি লালবাজার কন্ট্রোল রুমের অফিসার। খবর দেন তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ডে। আর তার পরে ওই ট্র্যাফিক গার্ডের অতিরিক্ত ওসি-র তৎপরতায় প্রাণ বাঁচল এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার। নোনাডাঙার বাসিন্দা মহিলা মাম্পি হালদার আপাতত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত ৯ টা নাগাদ ১০০ নম্বরে ডায়াল করেন এক জন। তিনি ফোন করে জানান, ২৪এ/১ রুটের একটি বেসরকারি বাস থেকে তিনি বলছেন। বাসটি এমন জোরে ব্রেক কষেছে যে বাসের এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাতে বাসের চালক এবং কন্ডাক্টর কোনও গুরুত্ব না দিয়ে উল্টে ওই মহিলার ভাইয়ের সঙ্গে গোলমাল করছে। ওই ব্যক্তি আরও জানান, বাসটি পার্ক সার্কাস আর চার নম্বর ব্রিজের মাঝখানে রয়েছে। এখনই পুলিসের সাহায্য দরকার। খবর পেয়েই লালবাজার কন্ট্রোল তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ডে খবর পাঠিয়ে বাসটিকে আটকাতে বলে এবং বিষয়টি দেখতে বলে। খবর পেয়েই বাসটিকে ধরতে গাড়ি নিয়ে যান ওই ট্র্যাফিক গার্ডের অতিরিক্ত ওসি সৌভিক চক্রবর্তী।
অম্বেদকর নম্বর ব্রিজের কাছে বাসটিকে আটক করে সৌভিকবাবু বাসে ওঠেন এবং দেখেন যন্ত্রণায় ছটফট করছেন এক মহিলা। সঙ্গে ওই মহিলার ভাই থাকলেও তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তিনি পুলিশ দেখেই সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। আর দেরি করেননি সৌভিকবাবু। সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোলে এবং তিলজলা গার্ডে ফোন করে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন এবং কার্যত ‘গ্রিন করিডর’ করে ওই মহিলাকে নিয়ে পৌঁছন বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বাসের কিছু যাত্রীও সৌভিকবাবুর পৌঁছন ওই হাসপাতালে।
সেখানে গিয়ে তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ডের ওই অফিসার নিজে বন্ড সই করেন এবং মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সৌভিকবাবু বলেন, ‘‘ওই অবস্থায় যা করার তাই করেছি। মনে হয়েছিল ওই মহিলাকে ভর্তি করে আগে ওঁর এবং বাচ্চার প্রাণ বাঁচানো দরকার।’’
বাসের চালককেও আটক করেছেন কর্তব্যরত ওই ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসার। মাম্পির ভাই সুরজিৎ রায়ের কথায়, ‘‘দিদিকে শুধু হাসপাতালে আনা নয়, বন্ডেও সই করে সাহায্য করেছেন ওই পুলিশ অফিসার। নাহলে দিদির কী হত জানি না!’’