শ্রীনু খুনের ছক কষতে বৈঠক বিশাখাপত্তনমে

মাস ছ’য়েক আগেই অপারেশন শ্রীনু-র ছক কষা শুরু হয় বিশাখাপত্তনমে। গত বছর অগস্টে বঙ্গোপসাগরের তীরের শহরের এক হোটেলে প্রাথমিকভাবে শ্রীনু নায়ডু হত্যার পরিকল্পনার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয়। বৈঠকে শ্রীনু খুনের মূলচক্রী শঙ্কর রাও ছাড়াও উপস্থিত ছিল এক ‘বড় মাথা’।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৭
Share:

মাস ছ’য়েক আগেই অপারেশন শ্রীনু-র ছক কষা শুরু হয় বিশাখাপত্তনমে। গত বছর অগস্টে বঙ্গোপসাগরের তীরের শহরের এক হোটেলে প্রাথমিকভাবে শ্রীনু নায়ডু হত্যার পরিকল্পনার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয়। বৈঠকে শ্রীনু খুনের মূলচক্রী শঙ্কর রাও ছাড়াও উপস্থিত ছিল এক ‘বড় মাথা’। খড়্গপুরের আরও কয়েকজন যুবকও বৈঠকে হাজির ছিল। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ এমনই তথ্য জেনেছে। সেই ‘বড় মাথা’কে ধরতে ইতিমধ্যেই ভিন্ রাজ্যে গিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

শ্রীনু খুনে আগেই বাসব রামবাবুর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন নিহতের মা রাবণাম্মা দেবী। পুলিশ সূত্রে খবর, বাসব রামবাবুর বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশেই। মাঝেমধ্যেই রামবাবু সেখানে যায়। তদন্তে পুলিশ এও জানতে পেরেছে, ২০১৬ সালের অগস্টে রামবাবুও না কি বিশাখাপত্তনমে ছিল। এ বিষয়ে জানতে জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। এসএমএস-রও জবাব দেননি তিনি।

পুলিশের এক সূত্রে খবর, বিশাখাপত্তনমের হোটেলে বৈঠক চলাকালীন ‘বড় মাথা’র কাছে একটি ফোন আসে। ফোনে কথা শেষে বৈঠকে ‘বড় মাথা’ জানিয়ে দেয়, ‘শ্রীনু কো কুছ করনা পাড়েগা।’ পরিকল্পনার সেই শুরু। অগস্টের পরও একাধিকবার বৈঠক হয়। শ্রীনু খুনের পরিকল্পনা ঠিক করতে গত ৮ জানুয়ারি রেলশহরে জন ফ্রান্সিসের বাড়িতে শেষ বৈঠকটি হয়েছিল।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য মিলেছে। এটা ঠিক, ভিন্ রাজ্যের ওই বৈঠকে ‘বড় মাথা’ও ছিল। ‘বড় মাথা’র ডাকে সাড়া দিয়ে খড়্গপুরের কয়েকজন যুবকও ওই বৈঠকে গিয়েছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই বৈঠকে কারা ছিল, সে ব্যাপারে কিছু তথ্য মিলেছে। বৈঠকে থাকা একাধিক ব্যক্তি ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে। বাকিদেরও খোঁজ চলছে।” বৈঠক চলাকালীন ‘বড় মাথা’র কাছে কে ফোন করেছিল, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

গত বুধবার খড়্গপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয়েই আততায়ীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল রেলশহরের ‘ডন’। শ্রীনু খুনে এখনও পর্যন্ত আটজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এরমধ্যে মূলচক্রী শঙ্কর ও জন ফ্রান্সিস এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ধৃতদের বাকি ছ’জন জেল হেফাজতে রয়েছে। পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষে শঙ্কর ও ফ্রান্সিসকে আজ, বুধবার ফের মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করানোর কথা। গত সোমবার শ্রীনু খুনের মামলায় মেদিনীপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন কে হামিদুর রাও ওরফে ডান্ডা সিংহ নামে একজন। পুলিশের এক সূত্রে দাবি, হামিদুর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। এই প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য মিলেছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে মঙ্গলবার মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কৃষ্ণা রাও ও রাধেশ্যাম সিংহের টিআই প্যারেড হয়। এক সূত্রে খবর, ধৃত দু’জনকে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য এ দিন যে তিনজন জেলে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন শ্রীনুর স্ত্রী পূজা নায়ডুর মা বি মিনা কুমারিও। ঘটনার পর বি মিনা কুমারিই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন