বিপদ বুঝেই পালায় সনাতন

খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার থেকে সনাতন বাড়ি ফেরেনি। ঝাড়খণ্ডের কিছু এলাকায় তার যাতায়াত থাকায়, সেখানকার পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। পুলিশের একটি দল ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি জায়গায় তল্লাশিও চালিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৫:১১
Share:

সনাতন গোস্বামী।

পরিচারিকার শিশু কন্যাকে নির্যাতনে অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত হোমগার্ডের হদিস পেতে হন্যে হয়ে ঘুরছে পুলিশ। অথচ সেই অভিযুক্তই মঙ্গলবার ওই শিশুকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করাতে এসেছিল! পরপর আরও দু’দিন তাকে হাসপাতালে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, চাইল্ড লাইনের হস্তক্ষেপ এবং সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি টের পেয়েই, বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া থেকে বেপাত্তা হয়ে যায় সনাতন গোস্বামী (ঠাকুর)।

Advertisement

তবে শরীরের বিভিন্ন অংশে সুচ বিঁধে থাকা ও দু’টি হাত ভাঙা ওই সাড়ে তিন বছরের শিশুর উপরে যে যৌন নির্যাতন হয়েছে, প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত এসএসকেএম-এর চিকিৎসকেরা। শনিবারই তাকে এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয়েছে। সুচগুলি বের করতে না পারলেও বিঁধে থাকা অঙ্গগুলিতে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সে জন্য চিকিৎসা শুরু হয়েছে। নির্যাতিত শিশুটির সঙ্গে তার মা থাকলেও রবিবার কলকাতা শিশুকল্যাণ সমিতির নির্দেশে কলকাতা চাইল্ড লাইন তার দায়িত্ব নিয়েছে।

পুরুলিয়া মফস্সল থানার নদিয়াড়া গ্রামের বছর বাষট্টির সনাতনের বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে থেকে মাসখানেক ধরে পরিচারিকার কাজ করছিলেন ওই শিশুর মা। ওই বৃদ্ধ হরিনাম করার পাশাপাশি ঝাড়ফুঁক, বশীকরণও করত। ভিন্ রাজ্যে থাকা তার দুই পুত্রবধূ সম্প্রতি নদিয়াড়ায় এসে ওই শিশুকে অসুস্থ দেখে সনাতনকে এক প্রকার জোর করেই পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে পাঠান। শিশুটির শরীরে অসংখ্য ক্ষত দেখে সন্দেহ জাগে ডাক্তারদের মধ্যে। হাসপাতালে গিয়ে বৃহস্পতিবার চাইল্ডলাইনের কর্মীরাও খোঁজখবর শুরু করেন। শিশুটির মা চুপ করে থাকায় সনাতনের খোঁজ শুরু হয়।

Advertisement

জেলা চাইল্ডলাইনের কো-অর্ডিনেটর দীপঙ্কর সরকার বলেন, ‘‘শিশুটির দিদিমার কাছেই জানতে পাই, সনাতন ভিজিটিং আওয়ার শুরুর পরে ওয়ার্ডের বারান্দায় বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। দিদিমাকে নিয়ে হাসপাতালের সর্বত্র তার খোঁজ করা হয়। কিন্তু, হদিস মেলেনি।’’ নদিয়াড়া গ্রামেও সনাতন ছিল না। সেই শিশুটির উপরে অত্যাচার চালিয়েছে, শুক্রবার শিশুর মায়ের কাছে তা জানার পর থেকে আফসোসের শেষ নেই চাইল্ড লাইনের কর্মীদের। তাঁদের আক্ষেপ, সনাতনকে পেলে তখনই তাঁরা আটক করে রাখতেন।

খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার থেকে সনাতন বাড়ি ফেরেনি। ঝাড়খণ্ডের কিছু এলাকায় তার যাতায়াত থাকায়, সেখানকার পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। পুলিশের একটি দল ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি জায়গায় তল্লাশিও চালিয়েছে। কিন্তু, সে নিজে মোবাইল ব্যবহার করে না বলে, গতিবিধির আন্দাজ পাচ্ছে না পুলিশ। পরিবারের লোকজন অবশ্য জানিয়েছেন, গ্রামে ফিরলে তাঁরাই পুলিশে খবর দিয়ে সনাতনকে ধরিয়ে দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন