মাঝেমধ্যেই অচেনা নম্বর থেকে ফোন। কখনও ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, কখনও এটিএম কন্ট্রোল অথরিটি অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে বলা হচ্ছে গ্রাহকের এটিএম কার্ড ‘লক’ হয়ে গিয়েছে। তা চালু করতে হলে তাঁকে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) বা ‘পিন’ দিতে হবে। ফোনের ও-পারে থাকা ব্যক্তিকে বিশ্বাস করে গ্রাহকেরা সেই সব তথ্য দিয়ে দিচ্ছেন। তার কিছু পরেই দেখা যাচ্ছে, গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক দফায় কয়েক হাজার টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে।
শুধু এটিএম বা কার্ড জালিয়াতিই নয়, বিমা করানোর বা বড় অঙ্কের ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামেও হাতানো হচ্ছে গ্রাহকদের টাকা। এমন নানা কায়দায় প্রতারণার ঘটনায় জেরবার বিধাননগরবাসী। পুলিশ দেখছে, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি-সহ একাধিক জায়গা থেকে অপরাধীরা এ কাণ্ড ঘটাচ্ছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে ধরাও পড়ছে তারা। কিন্তু এ ধরনের প্রতারণা বন্ধ করা যাচ্ছে না। পুলিশের দাবি, গ্রাহকেরা সতর্ক হলেই এমন ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই বাসিন্দাদের সচেতন করতে পথে নামল বিধাননগর পুলিশই। সোমবার বিধাননগর পূর্ব থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় কয়েকটি নির্দিষ্ট অপরাধ নিয়ে তথ্য সম্বলিত লিফলেট বাসিন্দাদের হাতে তুলে দিলেন পুলিশকর্মীরা।
পুলিশ বলছে, ব্যাঙ্ক কখনওই ফোনে পাসওয়ার্ড বা কার্ড নম্বর জানতে চায় না। তাই যে পরিচয়েই দুষ্কৃতীরা ফোন করুক, গ্রাহকেরা যেন তাদের তথ্য না দেন। এজেন্টের কথায় বিশ্বাস না করে আসল তথ্য জেনে বিমার বিষয়ে পদক্ষেপ করা ভাল। পুলিশ দেখেছে, বিমা দেওয়ার নামে এজেন্টরা নিজেদের কলম দিয়ে কাগজে গ্রাহকদের সই করাচ্ছেন। পরে সেই সই ব্যবহার করে টাকা হাতানো হচ্ছে। পুলিশের পরামর্শ, এজেন্টের কলম ব্যবহার না করা ভাল। পরিচারক-পরিচারিকাদের ক্ষেত্রেও এ দিন সল্টলেকবাসীদের সতর্ক করেছে পুলিশ। লিফলেটে তাদের আবেদন, বাসিন্দারা যেন পরিচারকদের ঠিকানা, ফোন নম্বর ও ছবি নিজেদের কাছে রাখেন। বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, কী ভাবে তাঁদের তথ্য ব্যাঙ্ক থেকে বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে পুলিশকেও ভাবতে হবে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে না পারলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ। এক পুলিশকর্তার কথায়, বাসিন্দাদের সচেতন করার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্ক ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলিকেও তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে।