মোড়ে মোড়ে শিবির। তার সঙ্গে টানা টহল, তল্লাশি।
ছন্দে ফেরা বসিরহাটে এ বার দুষ্কৃতীদের ধরতে তৎপরতা বাড়াল পুলিশ। গোয়েন্দারা নিশ্চিত, কিছু বহিরাগত দুষ্কৃতীর জন্যই গত সপ্তাহে অশান্ত হয়েছিল বসিরহাট। রবিবার রাত থেকেই পদস্থ পুলিশকর্তারা দুষ্কৃতী ধরতে গোটা শহর এলাকা কার্যত চষে ফেলেন। তাঁরা মনে করছেন, এখনও কিছু দুষ্কৃতী শহরে আত্মগোপন করে রয়েছে।
নতুন করে আর অশান্তি না হলেও রবিবার গভীর রাতে শশিনা এবং বাগুন্ডি এলাকায় পাঁচ-ছ’টি বোমা পড়ে। তাতে কেউ হতাহত হননি। এলাকার লোকজনের থেকে খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ ও র্যাফের বিশাল বাহিনী। তবে, কেউ ধরা পড়েনি। পুলিশ জেনেছে, পাঁচ-ছ’জন অপরিচিত যুবক ওই কাণ্ড ঘটায়। এ ছাড়াও বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী গোয়েন্দাদের দাবি, সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে দুষ্কৃতীরা বসিরহাটে ঢুকেছিল বিভেদ ঘটিয়ে পরিবেশ অশান্ত করে অবাধে লুঠপাট এবং ছিনতাই চালাতে। এর পিছনে কাদের মাথা, তা জানার চেষ্টাও চালানো হচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বহিরাগতরা অশান্তি করলেও দু’পক্ষের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ তা দ্রুত রুখেছেন। প্ররোচনায় বিশেষ পা দেননি। সেই কারণে গত সপ্তাহে বসিরহাট-সহ নানা জায়গা তেতে উঠলেও আক্রান্ত হয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মাত্র ২৮ জন। তার মধ্যে ১২ জনই পুলিশকর্মী। মৃত্যু হয়েছে এক জনের। কিন্তু লুঠপাট হয়েছে বহু জায়গায়। এ থেকেই পরিষ্কার দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্য।’’
শান্তির বাতাবরণ বজায় রাখতে সোমবার থেকে শহরে হেঁটে মাইক-প্রচার শুরু করেছে পুলিশ। কোনও রকম গুজব শোনা গেলে বা কোনও সন্দেহজনক বহিরাগতকে দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানোর আবেদনও করা হচ্ছে। এ দিনই শহরের বিভিন্ন এলাকায় ১০টি শিবির করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। সেখানে বিএসএফ জওয়ানদের নিয়ে থাকছেন এক জন করে পুলিশ অফিসার। যাতে কোথাও গোলমাল হলে দ্রুত পৌঁছনো যায়।
এ দিন বাস-সহ অন্যান্য যানবাহন চলেছে পুরোদমে। বেশির ভাগ স্কুল-কলেজে বিএসএফ জওয়ান এবং পুলিশ শিবির করে থাকায় সে সব জায়গায় পঠনপাঠন চালু হয়নি। তবে প্রাথমিক স্কুলগুলি খুলেছে। অধিকাংশ অফিস এবং ব্যাঙ্ক খুলেছে। বিশেষ উপায়ে এটিএম এবং ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু হয়েছে জানিয়ে বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি বলেন, ‘‘সকলের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা এ সপ্তাহের শেষের দিকে চালু হতে পারে। পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।’’