মিছিল আটকাল ‘অভিজ্ঞ’ পুলিশ

পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, জল কামান চলেছে, ইটের টুকরো আর কাচের বোতল ছোড়ার দৃশ্যও দেখা গিয়েছে। বোমাও পড়েছে, পুলিশের জিপ পুড়েছে, আতঙ্কে দোকানের ঝাপ বন্ধ হয়েছে। তবু বৃহস্পতিবার বিজেপির লালবাজার অভিযান আটকাতে পুলিশকে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৭ ০৪:০১
Share:

সংঘাত: পুলিশের লাঠির মুখে বিজেপি কর্মীরা। বৃহস্পতিবার বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। ছবি: শৌভিক দে

পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, জল কামান চলেছে, ইটের টুকরো আর কাচের বোতল ছোড়ার দৃশ্যও দেখা গিয়েছে। বোমাও পড়েছে, পুলিশের জিপ পুড়েছে, আতঙ্কে দোকানের ঝাপ বন্ধ হয়েছে। তবু বৃহস্পতিবার বিজেপির লালবাজার অভিযান আটকাতে পুলিশকে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। আগের দিনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পুলিশ এ দিন কিছুটা সংযতও ছিল। পূর্ব ঘোষণামতো এ দিন বেলা ১টায় কলেজ স্কোয়ার, ধর্মতলা ওয়াই চ্যানেল ও হাওড়ার দিক থেকে তিনটি মিছিল লালবাজারের দিকে রওনা দেয়। মাঝপথেই পুলিশের ব্যারিকেড আটকায় মিছিল। কর্মী-সমর্থকেরা ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে পুলিশ লাঠি, জল কামান চালায়। ছত্রভঙ্গ হয় জনতা। ঘটনাস্থল থেকে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিংহ, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, মীনাদেবী পুরোহিত, জয়প্রকাশ মজুমদারের মতো বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলনকারীরা কার্যত রণে ভঙ্গ দেয়।

Advertisement

ব্রেবোর্ন রোড

হাওড়া থেকে শুরু হয়ে মিছিল ক্যানিং স্ট্রিট ও ব্রেবোর্ন রোডের সংযোগস্থলে পৌঁছতেই পথ আটকায় ব্যারিকেড। সেখানে একটি পেট্রোল বোমা পড়ে, পুলিশকে লক্ষ করে ইট, কাচের বোতল ছোঁড়া হয়। পুলিশ রাস্তায় ফেলে আন্দোলনকারীদের পেটায়। তার পর জলকামান দিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। কিছুটা পিছিয়ে ফের এগোতে গেলে আন্দোলনকারীদের তাড়া করে ব্রেবোর্ন রোড ব্রিজ পর্যন্ত নিয়ে যায় পুলিশ। এখানে বেশ কয়েক জন আহত হন। ঘটনার সময় এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisement

বৌবাজার

বৃহস্পতিবার রাস্তার এক দিকে সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ যখন ব্যস্ত, তখন অন্য দিকে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে আন্দোলনকারীদের একাংশ। বিজেপির দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হওয়া এই মিছিল বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট-চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ক্রসিংয়ে পড়তেই শুরু হয় ধুন্ধুমার। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার ওসি-র গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। মহিলা থেকে বৃদ্ধ, কেউই রেহাই পায়নি। বিজেপি নেত্রী মীনাদেবী পুরোহিতকে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। লাঠি থেকে বাঁচতে বিজেপি সমর্থকদের একটি ব়ড় অংশ সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে ঢোকে। সেখানেও পুলিশ লাঠি চালায়। দু’জন মহিলার অভিযোগ, তাঁরা মেট্রো যাত্রী। পুলিশ তাঁদের মেরেছে। এখানে ফের আক্রান্ত হন সাংবাদিকেরা। অনেকের গায়েই প্রেসের জ্যাকেট ছিল।

বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট

অভিযান সব চেয়ে শান্তিপূর্ণ ছিল বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে। ধর্মতলা থেকে শুরু হয়ে গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ে মিছিল পড়তেই পথ আটকায় চার আইপিএস-সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী। সেখানে বসে পড়েন বিজেপি নেতারা। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের প্রায় ৪০ মিনিট কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি হয়। এর পর পুলিশ লাঠি চালায়। দু’টি বোমা ফাটার শব্দও শোনা যায়। পুলিশের লাঠি এবং বোমার শব্দে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। পুলিশ তাড়া করে ধর্মতলার দিকে যায়। সাড়ে ৩টের পর থেকে এলাকা ফাঁকা হতে শুরু করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন