সঞ্জয় রায়
মামলা দায়ের হয়েছিল আগেই। এ বার ডানকুনির সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে চলেছেন অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ। পুলিশ সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদেরই জি়জ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কয়েক জনের কাছে পুলিশি তলব পৌঁছে গিয়েছে বলেও লালবাজারের একটি সূত্রের দাবি।
লালবাজার সূত্রের খবর, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম সঞ্জয়কে বালিটিকুরির ইএসআই হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। সাত দিন অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মারা যান তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, ওই সাত দিন সঞ্জয়ের কী ধরনের চিকিৎসা হয়েছিল, তা জানার জন্যই ওই চিকিৎসকদের তলব করা হয়েছে। চিকিৎসার বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখার পর বেশ কিছু অনিয়ম তদন্তকারীদের নজরে এসেছে। চিকিৎসকদের সেই সব অনিয়মের ব্যাপারেও বিস্তারিত জেরা করা হবে বলে পুলিশের খবর। লালবাজারের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘পরবর্তী কালে অ্যাপোলোর শীর্ষ কর্তাদেরও ডাকা হতে পারে।’’
১৬ ফেব্রুয়ারি সঞ্জয় অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরের সাত দিনে সাত লক্ষ টাকার বেশি বিল হয়েছিল। পরিবারের অভিযোগ, এত বিল হওয়ার পরেও সঞ্জয়ের শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। সঞ্জয়ের পরিবার তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে চাইলে অ্যাপোলো বিলের টাকা বাকি রেখে তাঁকে ছাড়তে চায়নি। শেষমেশ ফিক্সড ডিপোজিট-সহ ব্যাঙ্কের নথি জমা রেখে সঞ্জয়কে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। আর তখনই অ্যাপোলো হাসপাতালের ‘অমানবিক’ চেহারা সামনে আসে। সিএমআরআই কাণ্ডের পরে এমনিতেই বেসরকারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল প্রশাসনের শীর্ষস্তর। তার মধ্যেই এই ঘটনায় অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয় রাজ্য সরকার। সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালের বিরুদ্ধে অবহেলায় মৃত্যু এবং তোলাবাজির মামলা দায়ের করে পুলিশ। খবর, অভিযোগে এক জন চিকিৎসকের নামও রয়েছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সঞ্জয়ের চিকিৎসার প্রায় ৪৫০ পাতার নথি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার সঞ্জয়ের পরিবারের তরফে বালিটিকুড়ির ইএসআই হাসপাতালের স়ংক্রান্ত নথি তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সঞ্জয়ের জামাইবাবু রাজেশ পাল এ দিন জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও ফুলবাগান থানার তদন্তকারী অফিসার বাইরে রয়েছেন বলে এ দিন তা মেলেনি।