ব়ড়দিনে সান্তার সাজে ভারতী ঘোষ। মেদিনীপুর ক্যাথলিক গির্জার সামনে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
প্রায় ছ’বছর ধরে তিনি ছিলেন শাসক দলের অতি-আস্থাভাজন। প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ সম্বোধন করে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। বিরোধী শিবিরের চোখে তিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার নন, বরং শাসক দলের কোনও তাবড় নেত্রী।
এ-হেন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকেই পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বদলি করে দেওয়া হল।
সোমবার রাজ্যের পাঁচ আইপিএস অফিসারের বদলির নির্দেশ জারি হয়। তাতেই জানানো হয়েছে, ভারতীকে পাঠানো হল ব্যারাকপুরে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের তৃতীয় ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসারের পদে। নবান্ন ও ভবানী ভবন সূত্রের খবর, মুকুল রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরে কয়েক দিন আগেই আইপিএস অফিসার রাজেশ কুমারকে সিআইডি-র এডিজি-পদ থেকে সরিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে পাঠানো হয়েছে। একই কারণে কোপ পড়ল ভারতীর উপরে। পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ মহলের একাংশের ধারণা, সবং উপনির্বাচনে ভারতীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ করেছিলেন জেলার তৃণমূল নেতাদের একাংশ। সেটিও ভারতীকে সরিয়ে দেওয়ার অন্যতম কারণ। আবার শাসক দলের জেলা নেতাদের দাবি, মাস দুয়েক ধরে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই ভারতীর সম্পর্কের অবনতি হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: বাঙালি প্রধানমন্ত্রী চান প্রণব
বদলি নিয়ে বক্তব্য জানার জন্য এ দিন বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা সত্ত্বেও ফোন ধরেননি ভারতী। এসএমএসেরও জবাব দেননি।
২০১২ থেকে এ দিন বদলির নির্দেশের আগে পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন ভারতী। এক সময়ে পুলিশ-জেলা ঝাড়গ্রাম আর পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি ছিলেন। পরে শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি হন। গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের সময়ে নির্বাচন কমিশন তাঁকে সিআইডি-র স্পেশ্যাল সুপারের পদে বদলি করেছিল। কিন্তু তিনি শাসক দলের এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে, নির্বাচন মিটতেই আগের পদে ফিরে আসেন। বিরোধীরা কটাক্ষ করতেন, শাসক দলের প্রার্থী হবেন ভারতী!
পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি হলেন অলোক রাজোরিয়া। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি ছিলেন। কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) ভি সলোমন নেসাকুমার হলেন পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি। ঝাড়গ্রামের এসপি হয়েছেন রাঠৌর অমিতকুমার ভারতকে। ঝাড়গ্রামের দায়িত্বে থাকা অভিষেক গুপ্তকে পাঠানো হয়েছে এসআইআরবি (স্টেট ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটেলিয়ন)-র সিও-পদে।