টানা চল্লিশ দিন পুলিশি হেফাজতে আছেন জয়প্রকাশ চৌহান। জেরায় অনেক কিছু বলেছেন। কিছু অস্পষ্ট রেখেছেন। কিন্তু, নানা সূত্র জুড়ে পুলিশ হিম্মতের থেকে কারা মাসোহারা এবং নানা সুযোগ সুবিধা নিতেন, তার একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, হিম্মত নিজে কয়েক জনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা যেমন বলেছেন, তেমনিই তদন্তে কয়েকজনের নাম জানা গিয়েছে। ওই তালিকায় একাধিক ব্যবসায়ী, কয়েক জন প্রোমোটার, সরকারি কর্মীদের কয়েকজন, পুলিশের কয়েক জন ছাড়াও রাজনৈতিক দলের কয়েকজনের নাম রয়েছে। তাঁরা হিম্মতের কাছ থেকে কত টাকা এবং কী সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন তা অফিসারেরা খতিয়ে দেখছেন। তবে এর বাইরে ২৫ জন যুবকের নাম পুলিশ জানতে পেরেছেন। যারা মাসমাইনের ভিত্তিতে হিম্মতের হয়ে নানা কাজ করেন বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ কমিশনার তদন্ত নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে এক পুলিশ কর্তা জানান, তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তাঁদের ব্যাপারে বিশদে তথ্য সংগ্রহ চলছে।
কমিশনারেটের এক অফিসার জানান, সরকারি থেকে আদিবাসীদের জমি দখল হিম্মতের নাম উঠে এসেছে। কিন্তু তার হয়ে কাজ করত একদল যুবক। তার বাইরে নিয়মিত কিছু লোককে হিম্মত নানা সুযোগ সুবিধা, টাকা দিত বলে শোনা যাচ্ছে। সে সব যাচাই করে পদক্ষেপের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।
ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই প্রধাননগর থানার একটি সাব ইন্সপেক্টরকে পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনার নির্দেশে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এনজেপি, মাটিগাড়া থানায় রাখার পর প্রধাননগর থানায় হিম্মতকে নানা সুযোগ সুবিধা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। সাসপেন্ড হওয়া পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জেরার সময় লকআপ থেকে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে তিনি হিম্মতকে বিরিয়ানি এবং বিয়ার খাওয়ান। পুলিশের একাংশ বলেছে, প্রধাননগর থানার অধীনেই ‘নেতাগিরি’ করে হিম্মত ‘দাদা’ হয়ে ওঠে। জংশন থেকে চম্পাসারি-একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েম করছিলেন। শাসক দলেই বাছাই প্রার্থী বদল করে তাকে পুরভোটে টিকিট দেন। তেমনই, পুলিশের একাংশের সঙ্গে বরাবর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ অবশ্য তা অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার সভাপতি গৌতম দেব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কেউ অনৈতিক কাজ করলে তার দায় তাঁকেই নিতে হবে।’’ হিম্মতের সঙ্গে দলের কোনও সংস্রব যে নেই সেটাও জানিয়েছেন পর্যটন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতি বরদাস্ত করেন না। সেটা মাথায় রাখতে হবে।’’