শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়
ইসলামপুরের দাড়িভি়ট স্কুলের গোলমালে দু’জন ছাত্রের মৃত্যুর পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, পুলিশের গুলিতে ওই দু’জনের মৃত্যু হয়নি। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত পুলিশের যা রিপোর্ট, তাতে ওই গুলি পুলিশের নয়।’’ কিন্তু এ দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, ওই ঘটনার তদন্তে সকলকে রাখা হচ্ছে। পুলিশও তার বাইরে নয়।
শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বিকাশ ভবনে জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বিষয়টি কঠোর ভাবে মোকাবিলা করতে বলেছেন। কঠোর ভাবেই তাঁরা মোকাবিলা করবেন। তিনি বলেন, ‘‘কেউ ছাড় পাবে না। তদন্তে সকলকেই রাখা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক, পরিচালন সমিতিও রয়েছে। এমনকি পুলিশও এর থেকে বাদ যাবে না।’’
ইসলামপুরে নিহত তাপস বর্মণের বাড়িতে গিয়েছিলেন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার এবং তার পুলিশই তো অভিযুক্ত! অভিযুক্ত নিজেই তদন্ত করে নিজের বিচার করবে? আমাদের দাবি, হাইকোর্টের কর্মরত বিচারপতিকে দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করানো হোক। উর্দিপরা তৃণমূল এবং উর্দিছাড়া তৃণমূলকে নিয়ে সব গুলিয়ে যাচ্ছে!’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের প্রশ্ন, পার্থবাবু এক জন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। তিনি খুব ভাল করে জানেন, মুখ্যমন্ত্রী এক বার পুলিশকে নির্দোষ বলে দেওয়ার পরে আরও কোনও নিরপেক্ষ তদন্ত হতে পারে? ‘‘লোকদেখানো তদন্ত হলেও তাতে কাজের কাজ হবে না। এই জন্যই তো আমরা বলছি, সিবিআই তদন্ত হোক। ভিখারি পাসোয়ান থেকে যে-কোনও ঘটনায় যিনি সিবিআই তদন্ত চাইতেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্তে ভয় পাচ্ছেন কেন,’’ প্রশ্ন সোমেনবাবুর।
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, তদন্তের প্রসঙ্গ তুলে আদতে পুলিশকে ক্লিনচিট দেওয়ার এটা এক পন্থা। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘সরকার আসলে দু’টি পথ খোলা রাখতে চাইছে। তদন্ত করে পুলিশকে ক্লিটচিট দেওয়া অথবা কোনও কারণে যদি প্রমাণিত হয় যে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল, তখন বলার মতো পরিসর রাখা যে, আমরা তো তদন্ত করেছি। ছাড়া হয়নি কাউকেই।’’