ফাইল চিত্র।
শ্রেণিকক্ষ একটি। শিক্ষকও এক জন। কিন্তু একই ঘরে বসছে দু’টি শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা! রাজ্যে প্রাক্-প্রাথমিক স্তরে শিক্ষা পরিকাঠামোর এমনই হাল। শিক্ষার্থী-জীবনের শুরুতেই এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে সাড়ে পাঁচ বছরের শিশুদের।
সম্প্রতি বিকাশ ভবনের এক বৈঠকে জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-দের রিপোর্টে এই তথ্য উঠে আসে। পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে প্রয়োজন পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতির দায় কেন্দ্রের উপরে চাপাচ্ছে রাজ্য সরকার। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বঞ্চনার জন্যই অবহেলিত হচ্ছে প্রাক্-প্রাথমিক স্তরের শিশুরা।
গত সপ্তাহে বিকাশ ভবনে বৈঠক করেন দফতরের কিছু কর্তা, প্রাথমিক ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, সর্বশিক্ষা মিশনের আধিকারিকেরা। সেখানে ডিআই-দের পাঠানো কিছু রিপোর্ট বিশ্লেষণ করা হয়। কর্তারা বুঝতে পারেন, প্রাক্-প্রাথমিকে মোটেই এমন হাল হওয়ার কথা নয়। উচিতও নয়।
আরও পড়ুন: নিউটাউন থানায় আটক সঙ্গীদের ছাড়াতে সিভিক পুলিশকে অপহরণ করল বাইকবাজরা!
ওই বৈঠকে উপস্থিত এক কর্তা জানান, রাজ্যে প্রাক্-প্রাথমিক স্তরে পড়ুয়া প্রায় ২০ লক্ষ। প্রাথমিক স্কুল ৫৬ হাজার। তার প্রায় প্রতিটিতেই ওই ক্লাস রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওই পড়ুয়াদের জন্য পৃথক শ্রেণিকক্ষ নেই। আলাদা শিক্ষকও থাকেন না। শিক্ষকদের পৃথক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এক শ্রেণিকক্ষে দু’টি শ্রেণিকে পড়ানো যায় কী ভাবে? এর ফলে প্রাক্-প্রাথমিক ও প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া দু’পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিমত শিক্ষা শিবিরের।
দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এটা মানতেই হয় যে, প্রাক্-প্রাথমিকের পড়ুয়ারা অবহেলিত হচ্ছে। কিন্তু এর জন্য দায়ী কেন্দ্র। তারা ওই স্তরে কোনও সাহায্য করে না। সর্বশিক্ষা বা সমগ্র শিক্ষা অভিযান শুরু হচ্ছে প্রথম শ্রেণি থেকে। মিড-ডে মিলের টাকাও দেয় না কেন্দ্র। রাজ্যকে পুরোটার ব্যবস্থা করতে হয়।’’ নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিকাঠামো উন্নত না-করলে ওই সব স্কুল ক্রমশই বেসরকারি স্কুলের থেকে পিছিয়ে পড়বে।’’