পত্রিকার পুরনো সংস্করণ দেখছেন স্বামী চিদেকানন্দ, স্বামী নরসিংহানন্দ ও শংকর। মঙ্গলবার এন্টালি অদ্বৈত আশ্রমে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
প্রতি মাসে পত্রিকাটি পড়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকতেন খোদ মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। দেখতে চাইতেন, সম্পাদকীয় পাতায় তাঁর সম্পর্কে কী সমালোচনা ছাপা হয়েছে। কারণ, প্রতি মাসে নিয়ম করে গাঁধীর রাজনীতিতে আধ্যাত্মিকতা ও অর্থনৈতিক ভাবধারার সমালোচনা করে লিখতেন তৎকালীন পত্রিকার সম্পাদক স্বামী অশোকানন্দ।
পরাধীন ভারতে প্রকাশিত সেই ‘প্রবুদ্ধ ভারত’ পত্রিকা আর মাত্র দু’বছর পরে পা দেবে ১২৫-এ। রামকৃষ্ণ ভাবধারায় প্রকাশিত এই মাসিক পত্রিকা নিছকই কোনও ধর্ম প্রকাশনা নয়। বরং দর্শন, সমাজ ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে এই পত্রিকা সারা পৃথিবীর এক অমূল্য সম্পদ বলেই মনে করেন সম্পাদক
স্বামী নরসিংহানন্দ। মঙ্গলবার কলকাতার অদ্বৈত আশ্রমে সেই পত্রিকা নিয়ে এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। স্বামী নরসিংহানন্দের মতে, বর্তমান প্রজন্ম যে-ভাবে স্বামী বিবেকানন্দ, ভগিনী নিবেদিতার বিষয়ে উৎসাহী, তাতে তাঁদের গবেষণায় এই পত্রিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
আলোচনায় উপস্থিত শংকর জানান, স্বামী বিবেকানন্দের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরেও তাঁর বহু রচনা এই পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। এমনকী কিছু লেখা সম্পাদনা করেছেন নিবেদিতা। ছাপা হয়েছিল স্বামী বিবেকানন্দের সাক্ষাৎকারও। স্বামী নরসিংহানন্দের কথায়, ‘‘এত বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে প্রকাশিত ‘প্রবুদ্ধ ভারত’ই দেশের একমাত্র প্রাচীন ইংরেজি পত্রিকা।’’
১৮৯৬ সালে চেন্নাইয়ে স্বামী বিবেকানন্দের গৃহী ভক্ত বি আর রাজম আইয়ার এই পত্রিকা প্রথম প্রকাশ করেন। তার দু’বছর পরে তাঁর অকালমৃত্যুতে পত্রিকার সম্পাদকীয় কার্যালয় আলমোড়ায় সরিয়ে নিয়ে যান স্বামী বিবেকানন্দ। এক বছর পরে সেটি স্থানান্তরিত হয় মায়াবতীতে। এখনও সেখানেই রয়েছে। ১৯২৫ সাল পর্যন্ত সেখানে পত্রিকাটি ছাপা হলেও তার মান উন্নয়নের জন্য ছাপার কাজের বন্দোবস্ত করা হয় কলকাতায়। তখন থেকে এখন পর্যন্ত সেই ধারা বজায় রয়েছে।