পঞ্চম, অষ্টমে ফিরে আসছে পাশ-ফেল

২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা এখন নেই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চালু ছিল। ২০১৫ সালে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পরেই নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ০৫:১৭
Share:

পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফিরছে। শনিবার কলকাতায় ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভার বাদল অধিবেশনে শিক্ষার অধিকার আইনের সংশোধনী পেশ করা হবে।’’

Advertisement

২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা এখন নেই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চালু ছিল। ২০১৫ সালে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পরেই নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়। তার মধ্যে পাশ-ফেল প্রথা ফেরানো কেন্দ্রের প্রধান লক্ষ্য ছিল। শিক্ষার বিষয়টি কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকার অন্তর্ভুক্ত বলে সমস্ত রাজ্যের মত জানতে চায় কেন্দ্র। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সহ ২৫টি রাজ্য পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার পক্ষেই মত দিয়েছেন বলে মন্ত্রী এ দিন জানান।
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী এ দিন আরও জানান, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেখানে যারা ফেল করবে তাদের দু’মাস পরে ফের এক বার পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে। পড়ুয়া পাশ না করলে, ওই ক্লাসেই রেখে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আইন সংশোধিত হলে রাজ্যগুলি নিজেদের মতো করে বিষয়টি চালু করে দিতে পারবে।

আরও পড়ুন: ‘বিজেপি বিদায়’ নিয়ে তরজা শুরু

Advertisement

এ দিনের অনুষ্ঠানে দেশের গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলগুলি ‘মিড ডে মিল স্কুল’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এসো, খাও এবং যাও। এটাই এখন রীতি। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বহু শিক্ষকেরও এটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। এটা সঠিক মানের শিক্ষা নয়। শিক্ষার অধিকারও নয়। এর পরিবর্তন প্রয়োজন।’’ তিনি অভিযোগ করেন, উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা নিচু ক্লাসের অঙ্ক করতে পারে না।
নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা অনেকে ভাল করে পড়তেই পারে না। ‘‘নতুন ব্যবস্থায় এক জন পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া ঠিক ভাবে পঞ্চম শ্রেণির অঙ্কও করতে পারবে, বইও পড়তে পারবে’’—মন্তব্য মন্ত্রীর।

এ দিন অবশ্য রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে তিনি জানান, শিক্ষার উন্নয়নের জন্য বহু আলোচনাতেই রাজ্যের কোনও প্রতিনিধি থাকেন না। এখানে রাজনীতির কোনও জায়গা নেই। যদিও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ অসত্য তথ্য। প্রতিটি বৈঠকেই রাজ্যের প্রতিনিধি থাকে।’’

পাশাপাশি পাশ-ফেল প্রথা চালুর প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘আইসিএসই বোর্ডই তো পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে পরীক্ষা চালু করেছে। এটা তারই নামান্তর। আগে আইন পাশ হোক। বিষয়টি আমাদের জানাক। তারপরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। তবে এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে পাশ ফেল প্রথা ফিরিয়ে এনে যেন স্কুলছুটের সংখ্যা না বাড়ে।’’

দেশ জুড়ে উচ্চশিক্ষা নিয়েও যে তিনি অসন্তুষ্ট এ দিন সে কথা গোপন করেননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘গবেষণাগারে পরিকাঠামোর অভাবে পড়ুয়ারা গবেষণা করতে বিদেশে চলে যাচ্ছেন। কোনও আবিষ্কারের পিছনে ভারতীয় মাথা থাকলেও আবিষ্কারটা ভারতে হচ্ছে না।’’

এরপরেই জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘এক জন শিক্ষকের অধীনে ৪০ জন গবেষণা করছেন। সেটা গবেষণা? নাকি ক্লাস? এ ভাবে গবেষণা হয় না। উন্নত মানের গবেষণাগার তৈরির জন্য ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ব্রেন ড্রেন আটকাতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন