বক্তা: শনিবার শহরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। —নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বাড়বাড়ন্তে ‘হতাশ’ হয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি-বিদায়ের ডাক দিয়েছেন বলে কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। কলকাতায় এসে শনিবার জাভড়েকর বলেন, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। এমনকী বাংলাতেও প্রতিদিন বহু মানুষ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে। এই চিন্তাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন হতাশ। ওঁর ২১ জুলাইয়ের সভায় সেই হতাশাই ফুটে উঠেছে।’’ যার পাল্টা আক্রমণে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আবার বললেন, ‘‘হতাশ ওঁরাই। তাই হীনম্মন্যতা আর হতাশায় এ সব কথা বলছেন। আসলে মমতার মনমোহিনী জনপ্রিয়তা দেখে ভীত সন্ত্রস্ত ওঁরা।’’
আরও পড়ুন: পঞ্চম, অষ্টমে ফিরে আসছে পাশ-ফেল
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কেন্দ্র থেকে বিজেপি হঠানোর লড়াইয়ে সনিয়া গাঁধী, লালুপ্রসাদ, মুলায়ম সিংহ যাদবদের পাশে তিনি থাকবেন বলে শুক্রবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চেই ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি ভোটের মতোই লোকসভা ভোটেও বিরোধী ১৭-১৮টি দলকে সঙ্গে নিয়ে জোটের পথেই তিনি যেতে চান বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেই জোট-সম্ভাবনাকে কার্যত গুরুত্ব না দিয়ে মমতার ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জাভড়েকর পাল্টা আত্মবিশ্বাস বোঝানোর চেষ্টা করেছেন এ দিন। বণিকসভার একটি অনুষ্ঠানের পরে তিনি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীকে হঠানোর দিবাস্বপ্ন যে কেউ দেখতেই পারেন। কিন্তু অস্তিত্বহীন জোট আমাদের কোনও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে না।’’
এ রাজ্যের পাশাপাশি অ-বিজেপি রাজ্যগুলিতেও ক্রমশ বিজেপির প্রসার হচ্ছে বলে দাবি করেছেন জাভড়েকর। সে জন্য বারবার দলিত ও গরিব মানুষ বিজেপির পাশে রয়েছে বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। দলিতরা আগে অন্য দলে ছিল। এখন তারাও আমাদের সঙ্গে রয়েছে। গরিবের সঙ্গে মোদীজির অটুট বন্ধন।’’ জাভড়েকরের এই দাবিকে নস্যাৎ করে পার্থবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিজেপিকে এ রাজ্যে দূরবীণ দিয়ে দেখতে হয়। কেন্দ্রে মন্ত্রীদের কোনও কাজ নেই। তাই এ রাজ্যে মন্ত্রীদের বারবার পাঠাচ্ছে বিজেপি। আর কুৎসিত কথাবার্তা বলে বিকেলের বিমান ধরে দিল্লি উড়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এত কথা না বলে আগে রাজ্যের মানুষের সঙ্গে মিশুন না।’’
সাম্প্রতিক দার্জিলিং বা বসিরহাটের মতো ঘটনায় বিজেপির ইন্ধন রয়েছে বলে বারবারই তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ করছেন। সেই অভিযোগে তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করে জাভড়েকর বললেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাজকে ভাগ করছেন, সম্প্রদায়কে বিভক্ত করছেন।’’ যার জবাবে পার্থবাবুর মন্তব্য, ‘‘দেশের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক মুখ হিসেবে প্রথমেই রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। উনি সব ধর্মের মানুষকে সমানভাবে দেখেন। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলেন। ওঁদের বিভিন্ন শাখা সংগঠনই তো ভেদাভেদের রাজনীতি করছে।’’