বাঙালি প্রধানমন্ত্রী চান প্রণব

জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধী নেত্রী হিসেবে ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। রাহুল গাঁধীর কংগ্রেস সভাপতি হওয়া এবং গুজরাত নির্বাচনে কংগ্রেসের অগ্রগতি বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনের ক্ষেত্রে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০২
Share:

প্রণব মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

রাষ্ট্রপতি পদে তিনি ছিলেন প্রথম বাঙালি। এ বার তাঁর সাধ, একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী। সোমবার হাওড়ায় আমতার একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে সেই ইচ্ছা ব্যক্ত করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ কথা বলার পরেই তিনি রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকর্মের ভূয়সী প্রশংসা করতে থাকেন। ফলে শুরু হয় গুঞ্জন— প্রণববাবু কি তবে মমতাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে আগ্রহী?

Advertisement

জাতীয় রাজনীতিতে বিরোধী নেত্রী হিসেবে ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। রাহুল গাঁধীর কংগ্রেস সভাপতি হওয়া এবং গুজরাত নির্বাচনে কংগ্রেসের অগ্রগতি বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনের ক্ষেত্রে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। তবে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না গড়ে একা লড়ার যে ইঙ্গিত তৃণমূল নেত্রী দিয়ে রেখেছেন, তাতে এ রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের সিংহভাগ জিতে জাতীয় রাজনীতিতে নিজের ‘ওজন’ প্রতিষ্ঠা করাই তাঁর লক্ষ্য বলে দলীয় সূত্রের খবর। অনেকের অভিমত, এই অবস্থায় প্রণববাবুর এ দিনের ইঙ্গিত ঘোলা জলে একটু নাড়া দিতে পারে।

এ দিন আমতার তাজপুরে এম এন রায় ইনস্টিটিউশনের অনুষ্ঠান‌ে এসেছিলেন প্রণববাবু। এই স্কুলে তিনি শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘আমি রাষ্ট্রপতি হয়েছি ঠিকই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও বাঙালি প্রধানমন্ত্রী আমরা পাইনি। বাঙালিদের জন্য এই পদটি খালি আছে।’’ এরপরেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা কী সুন্দর রাজ্য চালাচ্ছেন। নিজের দলকে শক্তিশালী করেছেন। নিজের মতো করে উন্নয়ন করছেন।’’

Advertisement

১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। খুব বেশিদিন অবশ্য ছিলেন না। তবে তাঁর এই স্বল্পমেয়াদি শিক্ষক জীবনকে যে তিনি ভুলতে পারেননি, সেকথা জানিয়ে প্রণববাবু বলেন, ‘‘মাস তিন-চার পরে আমি চলে যাই। তারপরে অন্য স্কুল, কলেজে প্রায় দশ বছর পড়িয়েছি। সেটাও ছেড়ে দীর্ঘ ৪৮ বছর ধরে রাজনীতি করেছি। কিন্তু প্রথম চাকরির কথা আমি ভুলিনি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই স্কুলের একজন শিক্ষক পরবর্তীকালে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন বলে এমন ধারণা করা ঠিক হবে না যে, এই স্কুলের শিক্ষক বলেই আমি রাষ্ট্রপতি হতে পেরেছি। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের একটা কথা বলতে পারি, সম্ভাবনা সবার মধ্যে আছে। তার সদ্ব্যবহার করে এই স্কুলের কোনও ছাত্র কেন প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না!’’

স্কুলের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে আমতা কলেজ মোড়ের কাছে প্রণববাবু কিছুটা অসুস্থ বোধ করেন। সঙ্গে থাকা মেডিক্যাল টিমের চিকিৎসকদের সহায়তায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি সুস্থ হন। চিকিৎসকরা জানান, সুগার আচমকা কমে যাওয়াতেই এই ঘটনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন