‘ভিআইপি’ বন্দি নিয়ে ব্যস্ত জেল

তখন ঘড়িতে ৩টে ১৮ মিনিট। প্রেসিডেন্সি জেলে এসে তাঁকে নিয়ে পৌঁছয় পুলিশের গাড়ি। সাধারণত নতুন বন্দি জেলে এলে আমদানি ওয়ার্ডে রাখা হয়। কিন্তু এক জন প্রাক্তন বিচারপতি বলে কথা! তাই কারনানকে সটান নিয়ে যাওয়া হয় জেল সুপারের ঘরে।

Advertisement

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০৫:০৪
Share:

জেলযাত্রা: বুধবার কলকাতা বিমানবন্দরে সি এস কারনান। ছবি: সুমন বল্লভ।

দিনে জেলে, রাতে হাসপাতালে!

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিলই। বুধবার সকালে তাই বিমানবন্দরে থেকে সোজা তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। জেলে ঢোকার সময়ে হাসিটা লেগে ছিল। হাসিমুখেই কারারক্ষীদের নমস্কার করেন তিনি। কিন্তু জেল সুপারের ঘরে বসার পর থেকেই তাঁর হাসিটা মিলিয়ে যায়! জেল হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁর রুটিন ‘চেকআপ’ করেন। পরে তাঁর শরীর খারাপ লাগলে রাতের দিকে এসএসকেএম-এ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কার্ডিওলজি বিভাগে ‘ইকো’ করা হয় প্রাক্তন বিচারপতি চিন্নাস্বামী কারনানের। পরে ফের আনা হয় প্রেসিডেন্সি জেলে।

কলকাতা হাইকোর্টের এই প্রাক্তন বিচারপতি আসবেন বলে এ দিন সকাল থেকেই সাজো সাজো রব ছিল প্রেসিডেন্সি জেল-চত্বরে। ‘ভিআইপি বন্দি’-র দেখভালে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে, সে জন্য এআইজি বিচিত্রা ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন কারা দফতরের ডিজি অরুণ গুপ্ত। সকাল থেকে জেল সুপারের ঘরে বসেই সেই দায়িত্ব সামলান বিচিত্রা।

Advertisement

আরও পড়ুন: ভ্রূণের হৃদ্‌যন্ত্রে গন্ডগোল, গর্ভপাত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে বাংলার দম্পতি

তখন ঘড়িতে ৩টে ১৮ মিনিট। প্রেসিডেন্সি জেলে এসে তাঁকে নিয়ে পৌঁছয় পুলিশের গাড়ি। সাধারণত নতুন বন্দি জেলে এলে আমদানি ওয়ার্ডে রাখা হয়। কিন্তু এক জন প্রাক্তন বিচারপতি বলে কথা! তাই কারনানকে সটান নিয়ে যাওয়া হয় জেল সুপারের ঘরে। সেখানে ঘণ্টাখানেকের উপরে তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়। কারা দফতরের এক কর্মী বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে অফিসারেরা কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উনি সে ভাবে কথাই বলছিলেন না। মুখটা
খুব শুকনো ছিল। বোধহয় শরীর খারাপ লাগছিল।’’

বিচারপতি কারনান আসবেন বলে জেলের হাসপাতালের প্রধান মেডিক্যাল অফিসারকেও বসিয়ে রাখা হয়েছিল। ঘণ্টাখানেক পরে তাঁকে জেলের ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কারনান অনেক দিন থেকেই ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রেও সমস্যা রয়েছে। সে সব ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার পরে হাসপাতালেই তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেন ভারপ্রাপ্ত জেলের চিকিৎসক। কিন্তু ৭টা নাগাদ হঠাৎই বুকে যন্ত্রণা হচ্ছে বলে চিকিৎসককে জানান কারনান। তিনি কারনানকে দেখার পরে আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সাড়ে সাতটা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে পরীক্ষা করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পরেই তাঁকে এসএসকেএমে পাঠান প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ।

কারা দফতরের কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, কারনানের মতো ‘হাই প্রোফাইল’ বন্দির ক্ষেত্রে কোনও রকম ঝুঁকিই নিতে চায়নি জেল। সে জন্যই কোনও রকম সময় নষ্ট না করেই তাঁকে এসএসকেএমে
পাঠানো হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন