ভুল বাদ দিলে কোথায় ঠাঁই প্রেসিডেন্সির

ভুল ছিল ‘কোড’-এই। কোডে ভুলের জেরে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তৈরি অগ্রবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ঠাঁই হয়নি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু ভুল যদি না-হতো?

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

ভুল ছিল ‘কোড’-এই।

Advertisement

কোডে ভুলের জেরে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তৈরি অগ্রবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ঠাঁই হয়নি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু ভুল যদি না-হতো? অর্থাৎ মান নির্ণয় প্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার সুযোগ যদি পাওয়া যেত, কেন্দ্রীয় তালিকার ঠিক কোথায় ঠাঁই হতো প্রেসিডেন্সির— প্রশ্ন তুলেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের অনেকেই।

মানের বিচারে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কেন্দ্রীয় তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে গত বছর। প্রথম বার প্রেসিডেন্সি ছিল ৪১তম স্থানে। মান যাচাই হয় পাঁচটি মাপকাঠিতে। তার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব পায় গবেষণা ও পেশাগত উদ্যোগ। প্রেসিডেন্সিতে গবেষণার কাজ যে আশাপ্রদ নয়, তা নিয়ে সরব অনেক শিক্ষকই। ‘‘গত তিন বছরে কোনও পিএইচডি রেজিস্ট্রেশন হয়নি এখানে। আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যাও নগণ্য,’’ আক্ষেপ এক শিক্ষকের।

Advertisement

প্রেসিডেন্সিতে গবেষণার কাজ যে আশানুরূপ নয়, সম্প্রতি ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল বা নাক-ও তা জানিয়েছে। উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া মঙ্গলবার বলেন, ‘‘তিন বছরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি হয়নি।’’ তবু তাদের অবস্থান ঠিক কোথায়, তা জানতে প্রেসিডেন্সি চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রকে। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানান, মান দেখেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সাহায্য দেবে কেন্দ্র। গবেষণার দুরবস্থায় প্রেসিডেন্সি কতটা অর্থসাহায্য পাবে, তা নিয়ে শিক্ষক-ছাত্রদের অনেকেই সন্দিহান।

কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির তুলনায় রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় সাহায্য কম পায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস জানান, কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান দ্বাদশ যোজনায় পেয়েছে ৩০০ কোটি টাকা, কিন্তু যাদবপুর পেয়েছে ২৬ কোটি! যাদবপুর এ বার সামগ্রিক-তালিকায় দ্বাদশ আর বিশ্ববিদ্যালয়-তালিকায় পঞ্চম। তাই তাদের সাহায্যের রাস্তা সুগম হল।

আরও পড়ুন: মেঘ চুরি, ফাঁকি দিল কালবৈশাখী

মান পরীক্ষায় যাদবপুর কম নম্বর পেয়েছে পরিকাঠামো এবং শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাতের ক্ষেত্রে। সুরঞ্জনবাবু এ দিন বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন ও গবেষণার মানের উপরে আর্থিক সাহায্য নির্ভর করলে আমাদের ক্ষেত্রে তা ভালই হবে।’’

কেন্দ্রীয় তালিকায় ২৭তম স্থানে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কম নম্বর পেয়েছে জনমানসে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ও শিক্ষক-পড়ুয়া অনুপাতের নিরিখে। ‘‘ভাবমূর্তি ফেরাতে না-পারলে গৌরব ফেরা মুশকিল,’’ বলছেন উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ।

বঞ্চনার অভিযোগ তুলে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে এবং রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে আলাদা প্রতিযোগিতা হোক। কেননা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় যে-অনুদান পায়, অন্য বিশ্ববিদ্যালয় তার কাছে দাঁড়াতে পারে না। ‘‘অনটন সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সাহায্য করছে রাজ্য। যাদবপুর ভাল ফল করেছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বলেছি, পিছিয়ে পড়ার কারণ খুঁজে দেখতে হবে,’’ বলেন পার্থবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন