রাজনীতিক হিসাবে অশোক ঘোষকে একশৃঙ্গ গণ্ডার বা কৃষ্ণসার হরিণের মতোই বিরল বলে উল্লেখ করলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সদ্যপ্রয়াত অশোকবাবুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দু’পাতার শোকবার্তা শুক্রবার এসে পৌঁছেছে কলকাতার হেমন্ত বসু ভবনে। ফরওয়ার্ড ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাসকে পাঠানো শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি লিখেছেন, ‘ছয়ের দশকের গোড়ায় আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই অশোকবাবুর কাছ থেকে অঢেল স্নেহ ও শুভেচ্ছা পেয়ে এসেছি। তাঁর মৃত্যুতে শ্রমিক শ্রেণির এবং দেশে বামেদের আন্দোলনে এমন শূন্যতা তৈরি হল, যা পূরণ করা কঠিন’।
আরও পড়ুন- দেখে নিন তৃণমূলের সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা
এক মাস হাসপাতালে লড়াই করার পরে বৃহস্পতিবার প্রয়াত হয়েছেন অশোকবাবু। দীর্ঘ ৬৫ বছর তিনি ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক পদে ছিলেন। স্বভাবতই তাঁর মৃত্যুতে দলের পরবর্তী নেতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কঠিন সমস্যায় পড়েছে ফ ব। আপাতত দলের রাজ্য নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় ঠিক করেছেন, ভোটের সময় তাঁরা পাকাপাকি রাজ্য সম্পাদক নিবার্চনের পথে যাবেন না। অশোকবাবু অসুস্থ থাকার সময়েই ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল প্রাক্তন সাংসদ বরুণ মুখোপাধ্যায়কে। এখন তাঁকে সামনে রেখেই রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যেরা দল চালাবেন। দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা থাকবে নরেন চট্টোপাধ্যায় ও হাফিজ আলম সৈরানির। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘অশোকদা’র কোনও বিকল্প হয় না। তাঁর অনুপস্থিতিতে যৌথ ভাবে দায়িত্ব নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে।’’
ফ ব-র রাজ্য দফতর এ দিন থেকেই তৈরি হয়েছে শেষ বারের মতো অশোকবাবুর প্রবেশের জন্য। পিস হেভ্ন থেকে শনিবার সকালে তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হবে হেমন্ত বসু ভবনে। দুপুরে সেখান থেকে শোকমিছিল যাবে শ্যামবাজার পর্যন্ত। নেতাজি মূর্তির পাদদেশে অশোকবাবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে চুঁচুড়া ঘুরে রাতে মরদেহ পৌঁছবে পুরুলিয়া। রবিবার সুইসার সুভাষ আশ্রমে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে তাঁকে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মাধ্যমে এ দিনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অশোকবাবুর শেষযাত্রার প্রস্তুতির খোঁজখবর নিয়েছেন। ফ ব নেতাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কোনও অসুবিধা হলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে। অশোকবাবুর মূর্তি স্থাপন এবং তাঁর নামে রাস্তার নামকরণেরও ইচ্ছা আছে মুখ্যমন্ত্রীর। তবে নির্বাচনী আচরণবিধি জারি হয়ে যাওয়ায় এখনই তেমন ঘোষণা হচ্ছে না।