Strong Room

President Election 2022: নিয়মের ভোটে বিভ্রাট শেষ লগ্নে স্ট্রং রুমে

বিধানসভার একটি ঘরকে স্ট্রং রুম হিসেবে বেছে নিয়ে ভোটের আগে সেখানে ব্যালট এবং বাক্স এনে রাখা হয়। সেই ঘরকে ঘিরে থাকে কড়া পাহারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২ ০৭:৩২
Share:

সিল করা হচ্ছে রুম। নিজস্ব চিত্র

যত জনের ভোট দিতে আসার কথা ছিল, প্রত্যেকেই এসেছিলেন। ভোট-দান পর্ব সম্পূর্ণ হয়ে গেল নির্ধারিত সময় ফুরনোর ঘণ্টাখানেক আগেই। তবু শেষ লগ্নে ব্যালট বাক্স আগলে রাখার স্ট্রং রুম ‘সিল’ করতে গিয়েই বাধল বিভ্রাট!

Advertisement

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের গোটা প্রক্রিয়াই সুনির্দিষ্ট এবং ধাপে ধাপে সাজানো। সংসদের পাশাপাশি প্রতি রাজ্যের বিধানসভায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে বিশদ বন্দোবস্ত থাকে। বিধানসভার একটি ঘরকে স্ট্রং রুম হিসেবে বেছে নিয়ে ভোটের আগে সেখানে ব্যালট এবং বাক্স এনে রাখা হয়। সেই ঘরকে ঘিরে থাকে কড়া পাহারা। ভোটদানের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে সব হিসেব মিলিয়ে ব্যালট-বোঝাই বাক্স ওই ঘরে বন্দি করে স্ট্রং রুম তালা এবং গালা দিয়ে ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। এই পরিচিত নিয়ম মানতে গিয়েই সোমবার সন্ধ্যায় বিধানসভায় বিভ্রাট ঘটে গেল। যার জেরে বন্ধ স্ট্রং রুম ‘আনলক’ করে আবার নতুন করে তালাবন্দি করতে হল!

ভোট শেয হওয়ার পরে সন্ধ্যায় স্ট্রং রুম বন্ধ করার কাজ সারছিলেন বিধানসভার সচিবালয়ের আধিকারিকেরা। উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের দুই পর্যবেক্ষক। নয়ম মোতাবেক তালা দেওয়ার আগে সাক্ষী হিসেবে সই করতে হয় সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী এজেন্টদের। সেই দায়িত্ব পালন করতে হাজির ছিলেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে তাপস রায় এবং বিরোধী দল বিজেপির তরফে মনোজ টিগ্গা। কিন্তু যে বয়ানে সই করে স্ট্রং রুম ‘সিল’ করতে হবে, তাতে শেষ মুহূর্তে অসঙ্গতি চোখে পড়ে কমিশনের পর্যবেক্ষকদের। ফের নতুন করে ওই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন তাঁরা। একটা আনুষ্ঠানিকতা মানতে গিয়েও বয়ানে কী ভাবে বিভ্রাট হল, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করছেন প্রশাসনিক শিবিরের একাংশ। গোটা প্রক্রিয়া ফের সম্পন্ন করে স্ট্রং রুম ‘সিল’ হওয়ার পরেই স্বস্তি পেয়েছেন তাপস-মনোজেরা!

Advertisement

স্ট্রং রুম আবার খুলে যাওয়ার কথা আজ, মঙ্গলবার কাকভোরে। তার পরে সকালের উড়ানে ব্যালট-বাক্স নিয়ে যাওয়া হবে দিল্লিতে। স্ট্রং রুম যত ক্ষণ আছে, বিধানসভার ভিতরে তার পাহারায় থেকেছেন কলকাতা সশস্ত্র পুলিশের কর্মীরা।

তথ্যের খাতিরে বলা যাক, বিধানসভায় এ দিন ভোট দিয়েছেন রাজ্যের ২৯১ জন বিধায়ক। সাধন পাণ্ডের মৃত্যুতে মোট ২৯৪ কেন্দ্রের মধ্যে একটি আসন শূন্য। বসিরহাট উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক রফিকুল ইসলাম মণ্ডল হজ করতে দেশের বাইরে, আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক নওসাদউদ্দিন সিদ্দিকী ভোটদানে বিরত ছিলেন। বিধানসভায় ভোট দিয়েছেন মোট ৩৪ জন সাংসদ। তার মধ্যে তৃণমূলেরই লোকসভার সাংসদ ২০ জন (বিজেপি-ত্যাগী অর্জুন সিংহকে ধরে) এবং রাজ্যসভার ১৩ জন। এ ছাড়াও, কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীও ভোট দিয়েছেন এখানেই।

বিজেপির বিধায়কেরা দল বেঁধে ভোট দিয়ে নিয়েছেন শুরুতেই। গলায় হলুদ উত্তরীয় পরে ভোট দিতে যাওয়ায় শুভেন্দু অধিকারীদের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ এনেছেন তৃণমূলের নেত্রী ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, জনজাতি প্রার্থী যখন রয়েছেন, সেই সময়ে জনজাতিদের ‘প্রতীকী রং’ ব্যবহার করে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে বিজেপি। অভিযোগ উড়িয়ে শুভেন্দু বলেছেন, তাঁরা কোনও প্রতীকই ব্যবহার করেননি। আবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক বেশি গাড়ির কনভয় ও নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে ভোট দিতে এসে নির্দেশিকা ভেঙেছেন বলে পাল্টা অভিযোগ করেছে বিজেপি। তৃণমূল যার জবাবে বলেছে, কিছু বলার নেই, তাই বিজেপি এ সব নিয়ে হইচই করছে!

বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ভোট দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা চত্বরে মুখ না খুললেও সমাজমাধ্যমে তিনি বলছেন, ‘‘বিজয়ী প্রার্থী সব সময় আমাদের সংবিধানকের মূল্যবোধকে ঊর্ধ্বে রাখবেন এবং জাতিকে শান্তি ও উন্নতির দিকে নিয়ে যাবেন, এই কামনাই করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন