বর্ষার জলে ভোগান্তি, প্রতিবাদে রেল অবরোধ

রেল সময়ের কাজ সময়ে করেনি বলে অভিযোগ তুলে অবরোধ করলেন যাত্রীদের একাংশ। তাতে ভোগান্তির একশেষ হল যাত্রীদেরই। দিনশেষে প্রশ্ন রয়েই গেল, রেলের ঘুম ভাঙবে কি?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:১২
Share:

হুগলির খন্যানে রেল অবরোধ। বুধবার সুশান্ত সরকারের তোলা ছবি।

রেল সময়ের কাজ সময়ে করেনি বলে অভিযোগ তুলে অবরোধ করলেন যাত্রীদের একাংশ। তাতে ভোগান্তির একশেষ হল যাত্রীদেরই। দিনশেষে প্রশ্ন রয়েই গেল, রেলের ঘুম ভাঙবে কি?

Advertisement

বুধবার সকালে অবরোধের ঘটনাটি ঘটেছে খন্যান স্টেশনে। অভিযোগ, প্রাক্‌-বর্ষার অবশ্য করণীয় কাজগুলো করেনি রেল। বর্ষায় যাতে জল না-জমে, সেই জন্য আগেভাগে নিকাশি সাফাই করা দরকার। সেটা না-হওয়ায় বর্ষার জলে চার-পাঁচ দিন ধরে ডুবে রয়েছে খন্যান স্টেশনে পাশের মূল রাস্তা। তার সঙ্গেই রয়েছে লেভেল ক্রসিংয়ের সমস্যা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যাতায়াতে প্রচণ্ড অসুবিধা হওয়ায় স্টেশনমাস্টারকে গিয়ে বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু সুরাহা না-হওয়ায় বাধ্য হয়েই এ দিন সকালে রেল অবরোধে নামতে হয়। অবরোধ চলে দু’ঘণ্টা। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় অবরোধ ওঠে। তার পরেই জল সরানোর কাজ শুরু করে রেল।

কিন্তু তত ক্ষণে অসংখ্য যাত্রীর দিনের কর্মসূচি বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে হাওড়া স্টেশনেই হলদিয়া লোকালের একটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে যাওয়ায় প্রায় দেড় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছিল। তাতেও যথেষ্ট ভুগতে হয়েছিল যাত্রীদের। এ দিন সকালের ব্যস্ত সময়ে আচমকা দীর্ঘ ক্ষণ অবরোধ চলায় নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি চরমে ওঠে। ট্রেন না-পেয়ে কেউ কেউ সড়কপথ ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু বেশির ভাগ যাত্রীই এ দিন আর গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। দুর্ভোগের প্রতিবাদে অবরোধে নেমে ভোগান্তিই ডেকে আনা হয়েছে বলে যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ। আর অবরোধকারীদের বক্তব্য, বর্ষায় ভোগান্তির স্থায়ী প্রতিকারের জন্য সাময়িক দুর্ভোগ তো পোহাতেই হবে।

Advertisement

রেল পুলিশের খবর, অবরোধ শুরু হয় সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ। জমা জলের সমস্যা মেটাতে এলাকার বাসিন্দারা এ দিনও স্টেশনমাস্টারকে অনুরোধ করেছিলেন। বিষয়টিতে তিনি আমল দিতে চাননি বলে অভিযোগ। তাতেই যাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রেল অবরোধ শুরু করে দেন। অবরোধের জেরে মেন লাইনে ট্রেন চলেনি। তবে হাওড়া কর্ড শাখা দিয়ে বেশ কি‌ছু ট্রেন চালানো হয়েছে। মেন লাইনে ওই দু’ঘণ্টায় বেশ কিছু লোকাল ট্রেন গড়ে আধ ঘণ্টা করে দেরিতে চলেছে। দেরি হয়েছে বেশ কয়েকটি মেল এবং এক্সপ্রেসেরও।

বর্ষা, শীতের মরসুমের আগেই বিশেষ ভাবে কিছু কাজ সেরে ফেলার কথা বলা হয়েছে রেলের নিয়মেই। যেমন রেললাইনের পাশে গাছের ডালপালা ছেঁটে ফেলা, লাইন বরাবর নিকাশি ব্যবস্থা সাফসুতরো রাখা ইত্যাদি। প্রাক্‌-বর্ষার সেই সব কাজ সময় মেনে সেরে ফেলার জন্য রেল বোর্ড সম্প্রতি নতুন করে নির্দেশ দিয়েছিল। ওই নির্দেশে বলা হয়, কী কী কাজ করা দরকার আর কী কী করা হল, সেই ব্যাপারে রিপোর্ট পাঠাতে হবে রেল বোর্ডে।

তার পরেও কেন ওই সব কাজ ঠিক ভাবে করা হচ্ছে না, পূর্ব রেলের কর্তারা সেই প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি। তাঁদের বক্তব্য, খন্যানের ওই এলাকার সমস্যা রেলের দেখার কথা নয়। তবে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকাটি রেলের। লেভেল ক্রসিংয়ের ওই রাস্তাও রেলেরই। ফলে জল জমার মোকাবিলা এবং অন্যান্য কাজ করার দায়িত্ব রেল-কর্তৃপক্ষেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন