বেগুন একটি অর্থকরী সব্জি। ভারত ছাড়া এশিয়ার নানা দেশ এবং ফ্রান্স, ইটালি, ইংল্যান্ড ও ইউরোপের কিছু দেশে এর চাষ হয়।
অাবহাওয়া এটা মূলত গ্রীষ্মকালীন ফসল। তবে বেগুন গাছ প্রখর তাপ ও বেশি শীত সহ্য করতে পারে না।
বোনার সময় পূর্ব ভারতে সারা বছর ধরেই বেগুনের চাষ হয়। প্রথম ফসল ফেব্রুয়ারি-মার্চ (ফাল্গুন-চৈত্র) নাগাদ রোপণ করে বর্ষায় তোলা হয়। দ্বিতীয় ফসল জুন-জুলাই ( জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়) মাসে বুনে অগস্ট-সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশ্বিন) মাসে তুলতে হয়। অক্টোবর-নভেম্বরে তৃতীয় ফসল বুনে ফেব্রুয়ারি-মার্চে তুলতে হবে।
জমি তৈরি ও চাষ প্রায় সব রকম মাটিতেই বেগুনের চাষ করা যায়। দোআঁশ ও এঁটেল-দোআঁশ মাটিই এর পক্ষে সব থেকে ভাল। পাঁচ-ছ’টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে ঝুরঝুরে হয়। এর বীজ খুবই হাল্কা, এক গ্রামে প্রায় আড়াইশোটি থাকে। হেক্টর খানেক জমির জন্য বীজতলা তৈরি করতে পাঁচশো গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। বীজ থেকে চারা বেরনোর পরা তা তুলে প্রধান জমির ঝুরঝুরে মাটিতে হাল্কা করে বসিয়ে দিতে হবে।
সার প্রয়োগ প্রায় ১২০ কেজি নাইট্রোজেন, ৬০ কেজি ফসফেট ও ৬০ কেজি পটাশ জরুরি। জমি তৈরির সময়ে হেক্টরে ২০০ কুইন্টাল পচা গোবর মিশিয়ে দিতে হবে। চারা রোপণের আগে অর্ধেক নাইট্রোজেন ও ৬০ কেজি করে ফসফেট, পটাশ মিশিয়ে দিতে হবে। মাস খানেক পরে বাকি ৬০ কেজি নাইট্রোজেন গাছের সারির উভয় দিকে চাপান দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। যথেষ্ট রস না থাকলে ভাল করে সেচ দিন।
উন্নত জাত যে সব জাতের বেগুন সচরাচর লাগানো হয়ে থাকে, তা হল: ব্ল্যাক বিউটি, পুসা ক্রান্তি, মুক্তকেশি, পুসা পারপল লং, কৃষ্ণনগর পারপেল রাউন্ড, কৃষ্ণনগর লং গ্রিন ইত্যাদি। দেশের কৃষি গবেষণা সংস্থা কিছু উন্নত সংকর তৈরি করছে যা ৫০- ৮০ শতাংশ অধিক ফলনে সক্ষম।