সমতলকে পাশে পেতে এ বার চিনের অনুকরণে প্রায় ‘লং-মার্চ’ এর ভাবনা পাহাড়ে। আলাদা রাজ্যের দাবিদার বিভিন্ন দলের নেতারা পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্স থেকে অন্তত ১৫ হাজার মানুষকে এতে সামিল করার পরিকল্পনা করেছেন। তবে এর পুরোটাই এখন নির্ভর করছে সর্বদলীয় সমন্বয় কমিটির অনুমোদনের উপর।
অতীতে পাহাড় থেকে সমতলের দিকে মিছিলের সময়ে শিলিগুড়িতে ও ডুয়ার্সের নাগরাকাটার শিপচুতে রক্ত ঝরেছিল। তাই এ যাত্রায় ‘লং-মার্চ’এর ছক কষা নিয়ে কানাঘুষো শুরু হতেই অতি মাত্রায় সতর্ক পুলিশ-প্রশাসন। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা জানান, অশান্তি থামিয়ে আলোচনায় বসার জন্য মোর্চা ও সহযোগীদের প্রস্তাব দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও পাহাড়ের অশান্তির আঁচ সমতলে ছড়ানোর চেষ্টা করলে সরকার চুপ থাকবে না। ইতিমধ্যেই পাহাড় লাগোয়া সমতলের সব ক’টি থানা এলাকায় বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে।
‘লং-মার্চ’ ধাঁচে যে আন্দোলনের কথা হচ্ছে তা মানছেন গোর্খাল্যান্ডের দাবি আদায়ের জন্য সদ্যগঠিত সমন্বয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হরকাবাহাদুর ছেত্রী। তিনি এখন দিল্লিতে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এখন প্রধান লক্ষ্য দিল্লি। পাহাড়ের গোর্খ্যাল্যান্ডের দাবিদাররাও দলে দলে দিল্লিতে সামিল হবেন। তবে তা লং-মার্চের ধাঁচে হবে না অন্য কোনও ভাবে তা কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত হবে।’’ তবে চিনের রেড আর্মির লং-মার্চের সঙ্গে এই মিছিলের মিল খোঁজা ঠিক হবে না বলেও মনে করেন নেতাদের একাংশ।
২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে মোর্চা তৈরির পরের বছর জানুয়ারিতে ‘মহাকরণ চলো’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। সে যাত্রায় শিলিগুড়িতে ও শিপচুতে মিছিল করে ১৪৪ ধারা অমান্য করে ডুয়ার্সে ঢোকার চেষ্টা হলে পুলিশ আটকায়। পুলিশের উপর হামলা হয়। পুলিশের পাল্টা গুলিতে ২ জন মোর্চা সমর্থকের মৃত্যু হয়। তাই মোর্চা নেতারাও এ বার তাড়াহুড়োর পক্ষপাতি নন। তবে তৈরি থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এ দিকে রাজ্যকে এড়িয়ে যে কিছু করতে চায় না দিল্লি তা স্পষ্ট হওয়ায় মোর্চার এক শীর্ষ নেতা জানান, কলকাতা ও দার্জিলিংকে দিল্লিতে ডাকা হলেই তো আলোচনা শুরু হতে পারে।