পশ্চিমবঙ্গে চাষ হওয়া কুমড়ো যাচ্ছে দুবাইয়ে। সঙ্গে ঢেঁড়শ, বিন এবং উত্তরবঙ্গের স্কোয়াশ। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গত এক মাসে ৬৫ টন কুমড়ো রফতানি হয়েছে দুবাইয়ে। তাতে উৎসাহিত চাষিরা। রাজ্যের অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের কর্তারা জানান, রফতানির ফলে আনাজের ভাল দাম পাচ্ছেন চাষিরা। রাজ্য সরকারের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের দাবি, এই ঘটনায় আনাজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে রাজ্য জুড়েই। সরকার প্রযুক্তির পাশাপাশি সেচ, জমি এবং আর্থিক সহায়তাও দিচ্ছে।
রাজ্যের আ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন সূত্রের খবর, বছর খানেক ধরে বাঁকুড়ায় প্রচুর কুমড়ো চাষ হচ্ছে। তার পরিমাণ এতটাই যে গোটা রাজ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব। মূলত বাঁকুড়া জেলার ওন্দা, তালডাংরা এবং সিমলাপালে কুমড়োর চাষ বেশি। ওই কর্পোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যাল জানান, বাঁকুড়ার চাষ হওয়া দু’কেজি থেকে ৬ কেজি ওজনের কুমড়োর কদর বেশি দুবাইয়ে।
কেন? আনাজ রফতানিকারী সংস্থা কসবার লালমাটি অ্যাগ্রোর কর্ণধার মৃণাল মাজির কথায়, ‘‘ফিলিপিনস, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা থেকেও কুমড়ো নেয় দুবাই। কিন্তু ও দেশের আমদানকারীরা জানিয়েছেন, বাঁকুড়ার কুমড়োর স্বাদই আলাদা। এই কুমড়ো মিষ্টিও বেশি। এখন তো প্রতিদিনই কুমড়ো যাচ্ছে সেখানে।’’
রফতানিকারী সংস্থা সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে ওড়া এমিরেটস-এর বিমানে মাল বহনের ক্ষমতা সীমিত। এয়ারকন্ডিশন্ড কনটেনারও ছোট। তবে প্রতিদিনই এমিরেটসের বিমানে দুবাইয়ে কুমড়ো পাঠানো হচ্ছে। মুম্বই থেকেও জাহাজে করে এক বারে ৫০ টনের বেশি কুমড়ো রফতানি করা হচ্ছে। রফতানি সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, কেজি প্রতি ৩০-৩৫ টাকা করে পান তাঁরা। চাষিদের কাছ থেকে কুমড়ো কিনে তা প্যাকেজ করতে খরচ দিতে হয় তাঁদের। তবে বিমানের ভাড়া দেয় দুবাইয়ের ব্যবসায়ীরা।
আর কুমড়ো বেচে কেমন দাম পান চাষিরা? শুভাশিসবাবু জানান, রফতানির কুমড়োর জন্য কেজি প্রতি ১০-১২ টাকা করে পান চাষিরা। রাজ্যের বাজারে কুমড়ো বেচে সেই দাম তাঁদের জোটে না। স্বভাবতই তাঁরা খুশি। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, আলু ছাড়া বড় মাত্রায় অন্য আনাজ উৎপাদনে এক সময় তেমন আগ্রহ ছিল না রাজ্যের চাষিদের। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনাজ চাষে জোর দেন। কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত জানান, তাতে ফল মিলেছে। এখন কুমড়ো, টমেটো, বিন, পালং শাক, ঢেঁড়শ-সহ নানা আনাজ চাষ হচ্ছে রাজ্যে।