উচ্চমাধ্যমিকে সাফল্য অটুট পূর্ব মেদিনীপুর

এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে গড় পাশের হার ৮৬.২৯ শতাংশ। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরে পাশের হার ৯৪.১৯ শতাংশ।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ০০:৫৯
Share:

সাফল্যের আনন্দে উল্লাস। নিজস্ব চিত্র

মাধ্যমিকের পর উচ্চমাধ্যমিক। পাশের হারে এবারও রাজ্যে শীর্ষস্থান রইল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় প্রথম ছিল এ জেলারই ছাত্র সৌগত দাস । উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থান হয়তো হয়নি, কিন্তু দ্বিতীয়-সহ ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম স্থান দখল করেছেন এই জেলার ১০ পড়ুয়া।

Advertisement

বাজকুল বলাইচন্দ্র হাইস্কুলের ছাত্র তন্ময় মেইকাপ ৮৯৬ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়েছেন। পটাশপুরের মংলামাড়ো মঙ্গলা অ্যাকাডেমি স্কুলের শঙ্খদীপ বেরা ষষ্ঠ স্থান, তমলুকের রাজকুমারী সান্তনাময়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সৃজিতা দাস, কন্টাই হাইস্কুলের শুভ্রশঙ্কর দত্ত সপ্তম হয়েছেন। এছাড়া, এগরার ঝাটুলাল হাইস্কুলের রাতুল সামন্ত, কন্টাই মডেল ইনস্টিটিউশনের শুভম মাইতি অষ্টম, চণ্ডীপুরের হাঁসচড়া মৃত্যুঞ্জয় ধনঞ্জয় হাইস্কুলের সূর্যতপা সাঁতরা, কোলাঘাটের গোপালগঞ্জ প্রিয়নাথ বাণীভবন স্কুলের দিশিকা মান্না নবম হয়েছেন। তমলুক হাইস্কুলের অর্পিতা মৃধা এবং কন্টাই মডেল ইনস্টিটিউশনে অনুপম পাল দশম স্থান লাভ করেছেন।

মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া পড়ুয়াদের মধ্যে বিশেষভাবে নজর কেড়েছেন অর্পিতা। তিনি কলা বিভাগে পড়েই দশম হয়েছে। আর তাঁর স্কুল তথা তমলুক শহরের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যালয়টি থেকে এই প্রথম কেউ মেধা তালিকায় স্থান পেল।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুর

• মোট সফল ৯০.১৯
• ছাত্র ৯৪.২৯ • ছাত্রী ৯৪.১০

*নিয়মিত ছাত্রছাত্রীদের হিসেব, পাশের হার শতাংশে

এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে গড় পাশের হার ৮৬.২৯ শতাংশ। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরে পাশের হার ৯৪.১৯ শতাংশ। অর্থাৎ রাজ্যের গড় পাশের হারের চেয়ে প্রায় আট শতাংশ বেশি। গত দু’বছরের চেয়ে এ বার পাশের হারও বেশি। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে পাশের হার ছিল ৯২.৮৭ শতাংশ। ২০১৮ সালে তা ছিল ৯১.৯৮ শতাংশ।

পাশের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি জেলায় প্রত্যন্ত পড়ুয়ারাও মেধা তালিকায় স্থান করে নেওয়ায় খুশি জেলার শিক্ষক মহল। বাজকুল বলাইচন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘পড়ুয়া, শিক্ষক ও অভিভাবকদের যৌথ প্রয়াসেই আমাদের জেলার এমন সাফল্য। গ্রামীণ এলাকার বিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার ব্যাপারে অভিভাবকেরা সচেতন হওয়ার ফলে প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল পড়ুয়ারা ভাল ফল করছে।’’ তমলুকের রাজকুমারী সান্তনাময়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা মজুমদার বলেন, ‘‘জেলার পড়ুয়াদের মেধার পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতনতা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্যেই এমন ভাল ফল হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকার বিদ্যালয়গুলির পড়ুয়ারা যেভাবে সাফল্য দেখাচ্ছে, তা খুবই উৎসাহের।’’

জেলার এমন সাফল্য নিয়ে জাতীয় শিক্ষক সোমনাথ মিশ্রর বক্তব্য, ‘‘এটা বহুদিনের ছবি। আমাদের ছাত্রাবস্থাতেও দেখেছি, কলকাতার ভাল কলেজে পড়া ছেলে মেয়েদের বেশিরভাগই মেদিনীপুরের। তখন তো মেদিনীপুর ভাগ হয়নি। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের ছেলে মেয়েদের লড়াইয়ের ক্ষমতা আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের দিকে তাকালেও তার আঁচ পাওয়া যাবে। এখানকার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনাতেও সেই জেদ দেখায়। তা ছাড়া এখন ছেলেমেয়েরা মাধ্যমিকের পর থেকেই উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতি শুরু করে দেয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন