অপহরণ থেকে মাফিয়া-মদত, নানা অভিযোগে বদলি আইসি

বছর দুয়েকেরও বেশি সময় ধরে পূর্বস্থলীতে রয়েছেন সোমনাথবাবু। নানা ঘটনায় তাঁর দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। মাস আটেক আগে কালনা আদালতের এক আইনজীবী অভিযোগ করেন, ভিন রাজ্যে গিয়ে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০০:২০
Share:

পূর্বস্থলী থানার আইসি সোমনাথ দাসকে বদলি করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

অপহরণ থেকে বালি মাফিয়াদের মদত দেওয়া, সম্প্রতি নানা অভিযোগে নাম জড়িয়েছিল পূর্বস্থলী থানার। দুই এএসআই এবং এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ডও করা হয়। এ বার বদলি হলেন ওই থানার আইসি সোমনাথ দাস। যদিও পুলিশের দাবি, এটা একেবারেই রুটিন বদলি। জানা গিয়েছে, সোমনাথবাবুকে পাঠানো হচ্ছে কালিম্পংয়ে। তাঁর জায়গায় নতুন আইসি হচ্ছেন রাকেশচন্দ্র মিশ্র। তিনি হাওড়ার সাঁকরাইলে সিআই পদে ছিলেন।

Advertisement

বছর দুয়েকেরও বেশি সময় ধরে পূর্বস্থলীতে রয়েছেন সোমনাথবাবু। নানা ঘটনায় তাঁর দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। মাস আটেক আগে কালনা আদালতের এক আইনজীবী অভিযোগ করেন, ভিন রাজ্যে গিয়ে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। এই ঘটনায় হাত ছিল পূর্বস্থলীর এক যুবকের। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ঘটনায় ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা সোমনাথবাবু এবং ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ১৬ দিন আদালত বয়কটও করেন তাঁরা। মাস দেড়েকের মধ্যে আরও তিনটি অভিযোগ সামনে আসে।

পূর্বস্থলী ২ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কর্তারা অভিযান চলাকালীন কয়েকটি বালিবোঝাই লরির ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় এক বালি মাফিয়া দলবল নিয়ে সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেন বলে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ ওই মাফিয়াকে গ্রেফতার করলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ দাবি করেন, পুলিশের মদতেই এত দিন দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল ওই মাফিয়া। এরপরেই থানা থেকে পালিয়ে যায় এক অভিযুক্ত। তাঁকে পরে পুলিশ গ্রেফতার করলেও থানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। সাসপেন্ড করা হয় এক এএসআই এবং এক কনস্টেবলকে। এই রেশ কাটতে না কাটতেই খড়দত্তপাড়ার এক যুবক রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, কালীপুজোর নাম করে ছোট, বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলছে পুলিশ। প্রমাণ হিসাবে কয়েকটি কুপনও তিনি দেন। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় ঘটনার তদন্তে নামেন। সাসপেন্ড করা হয় এএসআই কবিরুদ্দিন খানকে। থানার ‘ডাকবাবু’ হিসাবে পরিচিত এই এএসআইয়ের সই ছিল কুপনে।

Advertisement

পরপর এমন ঘটনায় পুলিশের একাংশই দাবি করেন, আইসির মদত ছাড়া কোনও আধিকারিক কোনও কাজের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি ওঠে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সোমনাথবাবুর কাছে এ নিয়ে কয়েকটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়। বিকেলে তাঁকে বদলির বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণবাবু বলেন, ‘‘এটা রুটিন বদলি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন