100 days work

ব্যাঙ্ক মিশে যাওয়ায় তথ্য সংগ্রহে সমস্যা

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কোষাগার থেকেই ওই প্রকল্পের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন।

Advertisement

প্রশান্ত পাল 

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫৪
Share:

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

একশো দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রমিকদের অনেকের ব্যাঙ্ক অন্য ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশে যাওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহে বেগ পেতে হচ্ছে সরকারি কর্মীদের। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে তথ্য সংশোধন করেই রাজ্যকে পাঠানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। সে ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পেতে সমস্যা হবে না।

Advertisement

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কোষাগার থেকেই ওই প্রকল্পের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন। সে মতো তথ্য সংগ্রহে শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের কর্মীরা। তথ্য সংগ্রহ থেকে পঞ্চায়েত দফতরের নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করার কাজ চারটি ধাপে চলছে।

সরকারি কর্মীদের অভিজ্ঞতা, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট যে ব্যাঙ্কে ছিল, তা অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গে ইতিমধ্যে মিশে গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের আইএফএসসি কোড বদলে গিয়েছে। পাশবই-ও বদলে গিয়েছে। অথচ অনেকের কাছে নতুন পাশবই নেই, পরিবর্তিত আইএফএসসি কোড-ও নেই। শ্রমিকেরা জানান, বছর দুয়েক ধরে মজুরি দেওয়া বন্ধ বলে তাঁরা ব্যাঙ্কের খোঁজও নিতে যাননি।

Advertisement

একশো দিনের কাজের প্রকল্পের শ্রমিকদের অধিকারের দাবিতে লড়াই করা ‘পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি’-র পুরুলিয়া জেলা সংযোজক প্রেমচাঁদ মাইতি বলেন, ‘‘এটা বাস্তবিকই সমস্যা। আইএফএসসি কোড ঠিক না হলে শ্রমিকের অ্যাকাউন্টে মজুরির টাকা ঢুকবেই না। এই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ব্লকে আমাদের কর্মীদের খোঁজ নিতে বলেছি। সমস্যাটি প্রশাসনের নজরে আনব।’’

তবে বিষয়টি তাঁদের নজরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার দেবর্ষি নাগ। তিনি বলেন, ‘‘একটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে অন্য ব্যাঙ্ক মিশে যাওয়ায় আইএফএসসি কোড বদল হয়েছে। ব্লক থেকে যখন ব্যাঙ্কের কাছে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের তথ্য যাবে, তখন এই বিষয়টি উল্লেখ করে দেওয়া হবে। আশাকরি, শ্রমিকদের মজুরি পেতে সমস্যা হবে না।’’

পুরুলিয়া জেলার ব্যাঙ্কের লিড ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার যেখানে যেখানে এ রকম হয়েছে, সে সব তথ্য ব্লক প্রশাসনের কাছে রয়েছে। ব্যাঙ্ক মিশে যাওয়ার পরে নতুন আইএফএসসি কোডও তারা জানে। শ্রমিকদের তালিকা ব্যাঙ্কের কাছে এলে ব্লক প্রশাসনকে সংশোধন করার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

প্রশাসন জানাচ্ছে, শ্রমিকদের ব্যাঙ্কের তথ্য সংগ্রহে তাই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন কর্মীরা। প্রথম ধাপে, গ্রামে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে প্রশাসনের কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। যেমন জবকার্ড নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, আইএফএসসি কোড, যাঁর নামে জবকার্ড সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তিনি বা তাঁরাই কি না ইত্যাদি মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপরে তা নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করা হচ্ছে।

দ্বিতীয় ধাপ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বিষয়। কারও কারও ব্যাঙ্কের আইএফএসসি কোড বদল হয়ে থাকতে পারে। কোনও শ্রমিকের মৃত্যু হয়ে থাকলে তাঁর আইনি উত্তরাধিকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর এই ধাপের ‘অ্যানেক্সার বি’-তে উল্লেখ করতে হচ্ছে। পুরুলিয়ার একশো দিনের কাজের প্রকল্পের নোডাল অফিসার দেবর্ষি নাগ বলেন, ‘‘মাঝের এই সময়ে কত শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে সে তথ্য এখনও উঠে আসেনি। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের স্ত্রী বা স্ত্রীরও মৃত্যু হয়ে থাকলে তাঁর বড় ছেলের অ্যাকাউন্ট নম্বর আপলোড করতে হবে।’’ তৃতীয় ধাপে, ঠিক কত জন শ্রমিক, কত পরিমাণ বকেয়া মজুরি পাবেন, সেই তথ্য উঠে আসবে। তারপরে সেই তালিকা রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে। চতুর্থ ধাপে, বিভিন্ন জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া তালিকা রাজ্য প্রকাশ করবে।

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘তালিকা প্রতিটি পঞ্চায়েতে টাঙিয়ে দেওয়া হবে। কারও নাম বাদ পড়লে তিনি পঞ্চায়েতকে জানালে, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন