চিঁড়েচ্যাপ্টা: শুক্রবার বিকেলে দুবরাজপুরে শাল নদীর সেতুর কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত দুই যান। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত
একটি সরকারি বাস ও পাথর বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে জখম হলেন ৫০ জনেরও বেশি। আহতদের বেশির ভাগই বাসটির যাত্রী। জখম হয়েছেন বাস এবং ট্রাকের চালক ও খালাসিও। শুক্রবার বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে দুবরাজপুর থানার শাল নদীর সেতুর কাছে, পানাগড়-দুবরাজপুর ১৪ নম্বর রাজ্য সড়কে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর থেকে বহরমপুরগামী দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ওই বাস রাজ্য সড়ক ধরে সবে শাল নদীর সেতু অতিক্রম করেছিল। তখনই উল্টো দিক থেকে পাথর বোঝাই ট্রাকটি এসে বাসটিকে মুখোমুখি ধাক্কা মারে। সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই ছিল, বাস-ট্রাক ধাক্কা খেয়ে পাশাপাশি হয়ে যায়। সামনের দিক পুরোপুরি তুবড়ে যায় দু’টি গাড়ির। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। দু’পক্ষই উদ্ধারকাজে হাত লাগায়। সরকারি বাসের চালকের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ ছিল। তিনি মারাত্মক জখম অবস্থায় সামনের তুবড়ে যাওয়া অংশে ফেঁসে ছিলেন। ক্রেন ও গ্যাস কাটার এনে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
মিলিত ভাবে আহতের উদ্ধার করে প্রথমে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় আহতদের। প্রথমিক চিকিৎসার পরে অনেককে সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুবরাজপুর হাসপাতালের চিকিৎসক সোমনাথ অধিকারী বলেন, ‘‘৩৬ জনকে সিউড়ি রেফার করা হয়েছে। পনেরো জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, বেশ কয়েক জনের মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। দুর্ঘটনার জেরে বেশ খানিকক্ষণ যান চলাচল ব্যহত হয় ওই রাস্তায়।
চিবুক ও মাথায় আঘাত নিয়ে দুবরাজপুর থেকে সিউড়ি রেফার হওয়ার পথে রেলপুলিশের কর্মী চৈতালী মণ্ডল বলেন, ‘‘সিউড়ি যাব বলে দুর্গাপুর থেকে বাসে উঠেছিলাম আড়াইটে নাগাদ। সঙ্গে আমার বাচ্চা ও বাবা ছিলেন। চোখ লেগে গিয়েছিল। হঠাৎ মারাত্মক শব্দ ও ঝাঁকুনিতে উঠে দেখি ভয়ঙ্কর অবস্থা।’’ দুবরাজপুর হাসপাতালে কাতরাচ্ছিলেন বোলপুর দমকল কেন্দ্রের কর্মী কাজল কুমার সাউ। তাঁর কথায়, ‘‘ইলামবাজার থেকে বাসে উঠে চালকের ঠিক পিছনের আসনে বসেছিলাম। শাল নদী পেরিয়েই দেখি অন্য একটি গাড়িকে ওভারটেক করে ট্রাকটি সোজা বাসের দিকে ধেয়ে আসছে। পথ খুঁজে না পেয়ে ট্রাক সরাসরি আমাদের বাসে মারে। বাসচালকের তেমন দোষ ছিল না।’’
সুলেখা ভট্টাচার্য ছেলের সঙ্গে বহরমপুর যাচ্ছিলেন। মুখে আঘাত পেয়েছেন। কিন্তু আতঙ্ক তখনও কাটেনি তাঁর।