Adivasi Communities

৩২টি জায়গায় অবরোধের ডাক আদিবাসীদের

ইউনাইটেড ফোরাম অব অল আদিবাসী অর্গানাইজেশন অব ওয়েস্টবেঙ্গল আজ, বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধের ডাক দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মানবাজার, খাতড়া শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ০৯:৫১
Share:

ফের যানজটের মুখে পড়তে পারে সাধারণ মানুষ।

বৃহস্পতিবার ফের বন্‌ধের মুখে পড়তে চলেছে দু’জেলা। পুরুলিয়া জেলার ১৯টি এবং বাঁকুড়া জেলার ১৩টি রাস্তার মোড়ে আদিবাসীদের বিভিন্ন সংগঠন অবস্থানে বসতে পারে বলে জানিয়েছে। এর ফলে দু’জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে রেল, অত্যাবশকীয় পণ্য পরিবহণ, ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত ও তাঁদের পরিবারকে বন্‌ধের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতির উপরে তারা নজর রাখছে।

Advertisement

ইউনাইটেড ফোরাম অব অল আদিবাসী অর্গানাইজেশন অব ওয়েস্টবেঙ্গল আজ, বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধের ডাক দিয়েছে। তাদের দাবি, অ-আদিবাসী ক্ষত্রিয় কুড়মিদের দ্বারা আদিবাসীদের ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে এবং অনৈতিক ভাবে সরকারি মদতে সিআরআই-এর রিপোর্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে এসটি তালিকায় অন্তর্ভুক্তিকরণের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এই বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। প্রায় একই দাবিতে ২২ মে ১২ ঘণ্টা বাংলা বন্‌ধ ডেকেছিল ‘আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান’।

বন্‌ধ সমর্থকেরা জানিয়েছেন, সকাল ৬টা থেকে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ করবেন পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ানের চকবাজার ও কুইলাপাল, বোরোর বুরুডি, মানবাজারের রাইসমিল, পুঞ্চার ধাদকি, হুড়ার লালপুরমোড়, বরাবাজারের বামনিডি ও সিন্দরি, বলরামপুর কলেজমোড়, কাশীপুরের গামারকুড়ি, পাড়ার পলাশকুড়া, ঝালদার বিরসামোড়, পুরুলিয়ার দামদামোড়, জয়পুরের আটাকলমোড়, সাঁতুড়ির বেনাগড়িয়া ও মধুকুণ্ডা, নিতুড়িয়ার হরিডি, আড়শার আহারড়ামোড়, বাঘমুণ্ডির কালিমাটিমোড়ে। বাঁকুড়া জেলার অবস্থান হতে পারে খাতড়া, রাইপুর, হাতিরামপুর, আড়কামা, রানিবাঁধ, পোড়াডিমোড়, ফুলকুসমা, সিমলাপাল, শিবডাঙামোড়, পোয়াবাগান, হেবিরমোড়, সারেঙ্গা, পিরলগাড়িমোড়-সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়।

Advertisement

ইউনাটেড ফোরাম-এর যুগ্ম আহ্বায়ক তপনকুমার সর্দার জানান, বন্‌ধে রেল, অ্যাম্বুল্যান্স, শববাহী গাড়ি-সহ ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় গাড়িকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়া কোনও যাত্রী বা তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য হাসপাতালে বা বাড়ি ফেরার পথে যাতায়াতে যাতে অসুবিধায় না পড়েন, তা দেখতে বলা হয়েছে। ওষুধ এবং অত্যাবশ্যকীয় দোকান ছাড়া অন্যান্য সমস্ত দোকান বন্ধ রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

বন্‌ধ হলে পুরুলিয়া জেলায় বেসরকারি বাস চলাচল কার্যত বন্ধ থাকে। এ বার কী হবে? পুরুলিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বাস মালিকদের পরিস্থিতি বুঝে বাস চালানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। তবে বন্‌ধের জেরে বাসের কোনও ক্ষতি হলে বিমার সুবিধা পেতে অনেক ঝামেলার মুখে বাস মালিকদের পড়তে হয়। সে কারণে অনেকে ঝুঁকি নিয়ে বাস নামাতে চান না।’’

বাঁকুড়া জেলা বাস মালিক কল্যাণ সমিতির সম্পাদক সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বন্‌ধ সমর্থকেরা পোস্টার, প্রচারপত্র ছড়িয়ে প্রচার করেছেন। তাই বন্‌ধের বিষয়টি কমবেশি প্রায় অনেকেই জানেন। গাড়ি চলবে কি না, এ বিষয়ে আগাম কিছু বলা যাবে না। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে বাস চালানো যাবে কি না।

ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক তথা ইউনাইটেড ফোরামের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি রতনলাল হাঁসদার দাবি, ‘‘ফোরামের কর্তারা দেখেছেন, কুড়মি সম্প্রদায় আদিবাসী পরিচিতির দাবিতে ‘রেল টেকা’, ‘ডহর ছেঁকা’, ‘ঘাঘর ঘেরা’ প্রভৃতি কর্মসুচির নামে সরকারের উপরে চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। কুড়মিরা কখনও আদিবাসী নয়। তাদের জীবনযাত্রা, আচার-ব্যবহার, সংস্কৃতি আদিবাসীদের সঙ্গে মিল খায় না। কুড়মিদের আদিবাসী পরিচিতির দাবির বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’

যদিও তা মানতে নারাজ আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতোর দাবি, ‘‘১৯৩১ সালের সরকারি গেজেটে আদিবাসীদের তালিকায় সাঁওতাল, কোল, ভিল, মুন্ডা, ভূমিজ, কুড়মি সম্প্রদায়ের নাম উল্লেখ রয়েছে। তাঁরা না জেনে এ সব কথা বলছেন। আদিবাসী পরিচিতির দাবিতে আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন